ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন ঘটেছে শেখ হাসিনা সরকারের। এরপর নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন এই বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে পাশে থাকবে আইএমএফ। বর্তমানে একটি মিশন ঋণ সহায়তা দেয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় অবস্থান করছে। প্রতিনিধি দলটি আগামী মাসে আইএমএফ পরিচালনা পর্ষদের কাছে তাদের প্রতিবেদন দেবে।
জর্জিয়েভা বলেন, আইএমএফ বোর্ড টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন ঋণ সহায়তা শুরু করতে পারে অথবা এটি গত বছরের শুরুর দিকে চালু হওয়া বিদ্যমান সহায়তা কর্মসূচির অধীনে আরও ঋণের প্রসার ঘটাতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটেছে। বর্তমান বাংলাদেশ একটি নতুন দেশ। নতুন সরকার গঠনের পর নির্বাচন, বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতিবিরোধী এবং সংবিধানে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ করার জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা হলে এবং ভোটার তালিকা তৈরি হলে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে কাজ করছে। আর দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে আইএমএফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এর আগে জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে অধিবেশনে যোগ দেন তিনি। অধিবেশনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা।