
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বেজা) একটি অংশ। ছবি: সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অঞ্চল কব্জা করতে চেয়েছিলেন আলোচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদ, ওরফে এস আলম। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বেজা) কর্মকর্তারা জানান, ৪টি বেসরকারি অঞ্চল পেতে জোর তদবির চালান তিনি। শেষ পর্যন্ত অনুমোদন পান দুইশ একর জমি।
এদিকে, সন্তোষজনক অগ্রগতি না থাকায় কিছু অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম খতিয়ে দেখছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
২০২০ সালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে দুটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার আগ্রহ দেখায় শিল্প গ্রুপ এস আলম। সাড়া দেয়নি তৎকালীন বেজা প্রশাসন। দুই বছর পর আবারও দুটি অঞ্চল করার প্রস্তাব দেয় গ্রুপটি। বাঁশখালীর আলোকদিয়ায় একশ ৮৪ একর জমিতে বাঁশখালী এস আলম ইকোনমিক জোন এক ও গন্ডামারায় ২শ ৫৯ একর জমিতে বাঁশখালী এস আলম ইকোনমিক জোন দুই নামে আসে প্রস্তাব।সে প্রস্তাবও গ্রহণ করেনি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা।
কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এস আলমের প্রস্তাব পাস করাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা চাপ দেন তাদের।
বেজার সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে বেজার যে আভ্যন্তরীণ পদ্ধতি, সেই পদ্ধতিতে যে শর্তগুলো পূরণ করার কথা তা তারা পূরণ করেনি। এইজন্য আমরা ওই সময়ে কোনো বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে লাইসেন্স তাদের দিইনি। কোনো পক্ষের কোনো চাপই আমাদের কাছে বিবেচিত হয়নি।’
তবে দমে যাননি এস আলম। বেসরকারি অঞ্চল না পেয়ে সরকারি অঞ্চলে প্লটের জন্য আবেদন করেন। রপ্তানিমুখী কারখানা করার উদ্দেশ্যে ৫শ একর জমি চান মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে। এবারও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দারস্ত হন তিনি। গতবছর দুইশ একর জমি অনুমোদন করে বেজা। মূল্যবাবদ ১২ কোটি টাকাও দিয়েছে এস আলম। কিন্তু সরকার পতন হওয়ায় জমি বরাদ্দের চুক্তি থেমে গেছে।
সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই ধরনের শিল্প গ্রুপগুলো যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে; সেই ধরনের অভিযোগ আছে। সেই জায়গা থেকে এটার বিষয়ে সরাসরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা দুদক যারা আছে– তারা পদক্ষেপ নেবে।’
এদিকে, বেজা কর্মকর্তারা জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান জমি নিয়ে কাজ শুরু করেনি তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাতিল হতে পারে চুক্তি। এছাড়া ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ২টি অঞ্চলের সন্তোষজনক অগ্রগতি না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। বাতিল হতে পারে এই দুই উদ্যোগ।