
মূল্যস্ফীতি, চাকরি হারানো ও অর্থনীতিতে ধীরগতির কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও বৈষম্য বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০২৫ সালে ২২ দশমিক নয় শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২২ সালে তা ছিল ১৮ দশমিক সাত শতাংশ। এর মধ্যে অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা যাদের দৈনিক আয় দুই ডলার ১৫ সেন্টের নিচে ছিল তার হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে নয় দশমিক তিন শতাংশ হতে পারে। এর ফলে অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরও ৩০ লাখ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, ২০২৬ সালে দারিদ্র্যের হার কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটে বলা হয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে নিম্নবিত্ত মানুষ তাদের আয়ের বড় অংশ দিয়ে নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে।
২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় চার শতাংশ শ্রমিক তাদের চাকরি হারিয়েছেন। স্বল্প-দক্ষ শ্রমিকদের মজুরি দুই শতাংশ ও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের মজুরি শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ কমেছে।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সাবেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, 'মূলত খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও দীর্ঘদিন ধরে মজুরি না বৃদ্ধি পাওয়ায় দারিদ্র্য বাড়ছে।'
'দারিদ্র্য নিয়ে সব গবেষণায় দেখা গেছে—দারিদ্র্যের হার খাদ্য মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমান্তরালভাবে সম্পর্কিত। খাদ্য মূল্যস্ফীতি যত বেশি, দারিদ্র্যের হার তত বেশি। কারণ দরিদ্ররা খাবারের জন্য সবচেয়ে বেশি খরচ করেন।'
তার মতে, ৪০ মাসেরও বেশি সময় ধরে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি কমছে। কারণ নামমাত্র মজুরি বৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, 'খরচের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্রমিকের আয় বাড়েনি। তাই দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে।'
চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থাকবে বলে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে। পরের বছর তা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে—২০২৩ ও ২০২৪ সালে শ্রমবাজারের মন্দার কারণে প্রতি পাঁচ পরিবারের মধ্যে তিনটি সঞ্চয় ভেঙে তাদের আর্থিক চাপ মোকাবিলা করছে।