বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানির সবচেয়ে বড় দুই বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে বছর ব্যবধানে গেল জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে এই দুই বাজারেই বড় ধরনের পতন দেখেছে বাংলাদেশ।
বিজিএমইএর তথ্য, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪৫৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছেন মার্কিন ব্যবসায়ীরা; সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে করেছেন ৪০৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার মূল্যের। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে মার্কিন বাজার থেকে বাংলাদেশি পোশাক শিল্পের আয় কমেছে ১০.২৮ শতাংশ।
পরিসংখ্যান বলছে, বাজারটিতে রফতানি আয় কমা শীর্ষ ৫ দেশের তালিকার প্রথমে রয়েছে মেইড ইন বাংলাদেশ। এসময়ে দেশটিতে চীনের কমেছে ৪.০৪ শতাংশ আর ১.৫৩ শতাংশ কমেছে ভিয়েতনামের। ইন্দোনেশিয়ার ৭.৮২ ও ভারতের কমেছে ২.২৪ শতাংশ। অবশ্য মোটের ওপর যুক্তরাষ্ট্রই ৪.৬১ শতাংশ কমিয়েছে পোশাক আমদানি।
মন্দাভাবের কবলে পড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নেও গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি কমেছে ৪.৮৪ শতাংশ। এখানে অবশ্য বাজার হারানোর শীর্ষ ৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। ২০২৩ সালের প্রথম ৭ মাসে যেখানে ইইউ'তে ১ হাজার ১৬৭ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে, সেখানে চলতি বছর হয়েছে ১ হাজার ১১১ কোটি ১৪ লাখ ডলার মূল্যের। বাজারটিতে তুরস্কের কমেছে ৮.৫৫ শতাংশ, চীনের ৭.৩৪, ভারতের ১.৯৩ আর ১০.৩৬ শতাংশ কমেছে কম্বোডিয়ার।
বাজার হারানোর কারণ হিসেবে জ্বালানি সংকটকে সামনে এনে উদ্যোক্তারা বলছেন, জুলাই বিল্পব আর চলতি মাসের শ্রমিক অস্থিরতার অর্থনৈতিক মাশুল গুণে ফের রফতানি আয় বৃদ্ধির ধারায় ফিরতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত।
নিট শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন,
স্প্রিং, লেট স্প্রিং, হলিডে এবং ফল মৌসুমের অর্ডার আশানুরূপ আসেনি। এই মৌসুমগুলো শেষ হলে এরপর থেকে আবার অর্ডার আসার পরিমাণ বাড়তে পারে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিধারা বিশ্লেষণ করে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মার্কিন ফেডের নীতি সুদহার কমানোর ইতিবাচক প্রভাব বিশ্ববাজারে; সেই সুযোগ কাজে লাগাতে কৌশলী হতে হবে।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন নির্বাচনী হাওয়া। পাশাপাশি দেশটি নীতি সুদহার কমাচ্ছে। এতে মানুষ বেশি পরিমাণে পণ্য কিনবেন। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
জ্বালানি সংকট আর রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে বিশ্ববাজারে স্বাভাবিক রফতানি অব্যাহত রাখতে ব্যাংকখাতের বিদ্যমান নানা সংকট দূর করারও তাগিদ দিচ্ছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।