দেশের প্রধান রপ্তানি খাত- পোশাক শিল্প
দেশের রপ্তানি খাত কয়েক বছর ধরেই নানা চাপে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক মন্দা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রেতাদের ব্যয়সংকোচন, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি এবং দেশের ভেতরে ডলার সংকট- সব মিলিয়ে রপ্তানিকারকদের সামনে এক অচেনা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
উৎপাদকদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো এখন আগের মতো বড় ভলিউমে অর্ডার দিচ্ছে না। বরং ছোট ব্যাচে, কম দামে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে অর্ডার দিচ্ছে। এতে করে কারখানাগুলোর উৎপাদন পরিকল্পনা বিঘ্নিত হচ্ছে, শ্রম ব্যয় ও অপারেশনাল খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়ে যাচ্ছে। নতুন বিনিয়োগ তো নয়ই, বিদ্যমান লাইনগুলোও চালিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।
মূল বিষয়সমূহ-
বিশ্ববাজারে চাহিদা কমছে:
ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতারা অর্ডার কমাচ্ছে, আগের মতো বড় ভলিউমে অর্ডার দিচ্ছে না।
ছোট ব্যাচ, কম দামের অর্ডার ও দীর্ঘ ডেলিভারি টাইম কারখানার উৎপাদন পরিকল্পনায় বাধা সৃষ্টি করছে।
উৎপাদন ব্যয় ও আমদানি খরচ বৃদ্ধি
ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের খরচ বেড়ে গেছে।
উচ্চ ব্যয়ের চাপ আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্যের উপর প্রভাব ফেলছে।
প্রতিযোগী দেশগুলো (ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, তুরস্ক) কম দামে অফার করছে, বাংলাদেশ পিছিয়ে যাচ্ছে।
বাজার বৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা:
ইউরোপ ও আমেরিকার বাইরে নতুন বাজারে প্রবেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সম্ভাবনাময় অঞ্চল- লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা।
নতুন বাজারে প্রবেশের জন্য প্রয়োজন- পণ্যের ধরন, ব্র্যান্ডিং, সার্টিফিকেশন ও স্থায়ী লজিস্টিক সাপোর্ট।
টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের গুরুত্ব-
সবুজ কারখানা, কম কার্বন নির্ভর উৎপাদন, এবং টেকনিক্যাল টেক্সটাইল বা ডাইভার্সিফাইড গার্মেন্টস—এগুলো বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়ক।
সুযোগের দিক-
বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল পুনর্গঠনের ফলে নতুন সোর্সিং হাবের চাহিদা বেড়েছে।
বাংলাদেশে টেক্সটাইল ভ্যালু চেইনের সক্ষমতা এখনও শক্তিশালী।
সঠিক পরিকল্পনায় নতুন বাজারে প্রবেশ ও প্রযুক্তি-নির্ভর উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
কৌশলগত সুপারিশ-
বাজারভিত্তিক কৌশল তৈরি করা।
দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রযুক্তি বিনিয়োগ বাড়ানো।
নতুন পণ্যে বৈচিত্র্য এবং সবুজ উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নয়ন করা।