এনবিআরের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত দুদকের

এনবিআরের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত দুদকের
প্রকাশিত

জ্ঞাতআয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দিতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুদক মহাপরিচালক জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭-এর ১৭ নং বিধির আলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী তাদের সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাব বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

যে ১৭ কর্মকর্তার হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন— কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৩) এম এম ফজলুল হক, কর আপিল ট্রাইব্যুনালের কমিশনার লোকমান আহমেদ, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাহেলা সিদ্দিক, অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া, ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারিক রিকাবদার, যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা সাহরিন সুস্মিতা, কর অ্যাকাডেমির যুগ্ম-কর কমিশনার মো. মোরশেদ উদ্দিন খান, কর অঞ্চল ৮-এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল ১৬-এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, রেলওয়ে কাস্টমসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট পূর্বাঞ্চলের কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন, কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু, এনবিআরের যুগ্ম কমিশনার মো. তারিক হাছান, এনবিআরের সিআইসির সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, এনবিআরের সদস্য মো. লুৎফুল আজিম ও সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম।

গত জুলাই মাসে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল দুদক। ওই সময়ে দুদকে জমাকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে, প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন। অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়— করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে গিয়ে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা বিভিন্ন স্টেশনে চাকরিকালীন সময়ে একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে এবং নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাতআয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com