পিএসসি সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ চত্বর অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন এবং চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাদের এই অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পিএসসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা ‘পিএসসির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সংস্কার চাই’, ‘পিএসসি সংস্কার চাই’, ‘ইন্টারিম নয়, রাজপথ চাই’, ‘রাজপথ রাজপথ’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর করে তোলেন শাহবাগ এলাকা। এছাড়াও আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন। এসব ফেস্টুনে লেখা ছিল— ‘আর নয় চার বছর, এবার হোক এক বছর’, ‘জুলাইয়ের সরকার, ছাত্র কেন রাস্তায়’, ‘আবেদ গংয়ের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমা সেলিম বর্ণা বলেন, পিএসসি সংস্কার আসলে বিশাল একটি সংস্কারের নাম। তিনি উল্লেখ করেন, ৪৪তম, ৪৫তম এবং ৪৬তম বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি দেশবাসীর জানা হলেও এর কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। সরকারের এ ব্যর্থতা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেন তিনি। নাইমার মতে, ৫ আগস্টের আগের সময়ে যারা প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তাদের বিচার না হওয়ায় সেই গোষ্ঠী এখনো সক্রিয় রয়েছে।
এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, ৪৬তম বিসিএসে যার পাশে বসে লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে, সে আগে থেকেই প্রশ্নপত্র পেয়ে থাকতে পারে— এমন অনিশ্চয়তায় পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, ৪৪তম ও ৪৫তম বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের সমাধান না করেই ৪৬তম বিসিএসের পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ প্রশাসনের অব্যবস্থাপনারই প্রমাণ।
শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, লিখিত পরীক্ষা স্থগিত এবং পিএসসি সংস্কারের সুস্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া তারা শাহবাগ ছাড়বেন না। অবরোধের ফলে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। পুরো ঘটনাক্রম নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক নজর রাখছে।
শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন, দাবি তুলেছেন পিএসসি সংস্কারের ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিতের। প্রশ্নফাঁসের পুরনো অভিযোগের কোনো সমাধান হয়নি বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।
