

১৬ ডিসেম্বর কেবল ছুটির দিন নয়, এটি আমাদের জাতীয় চেতনার প্রতীক। স্বাধীনতার গল্প আজও শিক্ষার্থীদের মনে কতটা গেঁথে? পাঠ্যবইয়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের আত্মত্যাগ, তবে তা কি জীবনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, নাকি শুধু পরীক্ষার একটি অধ্যায় হিসেবে থেকে যাচ্ছে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানরা নানাভাবে ইতিহাসকে জীবন্ত করার চেষ্টা করছে—চিত্র, গল্প, নাট্যাভ্যাস এবং প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে। তবু ডিজিটাল প্রজন্মের কাছে দীর্ঘ পাঠ্যবই এবং নিরস বর্ণনা আগ্রহ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে অনেক সময় ইতিহাস মুখস্থের তথ্য হয়ে পড়ে, অনুভবের বিষয় নয়।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের সঙ্গে ইতিহাসের ব্যাখ্যাও বদলায়। এক সময়ে মুক্তিযুদ্ধকে জাতীয় ঐক্যের গল্প হিসেবে দেখানো হয়, আবার অন্য সময়ে কোনো নির্দিষ্ট দিককে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই শিক্ষার্থীদের কাছে ইতিহাস কখনও স্থির থাকে না—এটি সময় ও দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিবর্তিত হয়।
তবু সম্ভাবনা এখনও আছে। অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষা, মাঠভিত্তিক কাজ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য পাঠ এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎ শিক্ষার্থীদের ইতিহাস শুধু শেখায় না, অনুভব করায়।
বিজয় দিবসের দিনে প্রশ্নটাই স্পষ্ট, আমরা কি কেবল ইতিহাস পড়াচ্ছি, নাকি তা বোঝাতে পারছি? মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার গল্প শিক্ষার্থীর চেতনা, চরিত্র এবং জাতীয় পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠতে হবে। এ ছাড়া বিজয় দিবস শুধু একটি দিন হয়ে থাকুক, চেতনার নয়।