বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে জড়িয়ে আছে কোচিং স্কুলের পরিচিত চিত্র। শিক্ষার্থীরা অগণিত ঘণ্টা কোচিংয়ে বসে, সঠিক প্রস্তুতির চাপ অনুভব করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যাচ্ছে অনলাইন ভিত্তিক নতুন ধারা তৈরি হচ্ছে । কিন্তু প্রশ্ন হলো: এই পরিবর্তন কি সত্যিই কোচিং নির্ভরতা কমাচ্ছে, নাকি কেবল একটি ভিন্ন রূপ নিয়েছে?
বিষয়বস্তু:
১) কোচিংয়ের ঐতিহ্য এবং শিক্ষার্থীর চাপ
বাংলাদেশে শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন সকালে স্কুলের পরে, বিকালে কোচিংয়ে যায়। কোচিং শুধুমাত্র জ্ঞান দেয় না; এটি একটি মানসিক চাপের ক্ষেত্রও তৈরি করে। পরীক্ষার ভীতি, প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক প্রত্যাশা—সবই কোচিং নির্ভরতার কারণ।
২) অনলাইন ও স্বশিক্ষণ: নতুন বিকল্প
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। ইউটিউব, কুইজ অ্যাপ, এবং ই-লার্নিং কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের গতিতে প্রস্তুতি নিতে পারছে। অনেকের মতে, এটি কোচিংয়ের ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া কমিয়ে দিচ্ছে।
৩) শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা
ছাত্ররা জানাচ্ছে, “কোচিং এর গুরুত্ব কমে গেছে, কারণ অনলাইনে একই মানের টিউটোরিয়াল সহজলভ্য।” তবে কেউ কেউ মনে করছেন, “কোচিং মানে শুধু পড়াশোনা নয়, মানসিক প্রস্তুতিও দেয়। অনলাইনে সেটা মেলা কঠিন।”
৪) শিক্ষাবিদদের মতামত
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোচিং কমানো সম্ভব হলেও, পুরোপুরি না করা সম্ভব নয়। মূল কারণ: পরীক্ষার ধরন এখনও কঠিন এবং প্রতিযোগিতামূলক। তবে অনলাইন শিক্ষা ও স্বশিক্ষণের বিকল্প শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দিক খুলেছে।
৫) ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
যদি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও অনলাইন লার্নিং, প্র্যাকটিস সেশন, এবং কাউন্সেলিং সুবিধা দেয়, শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে অতি নির্ভরতা কমাতে পারবে। ফলে মানসিক চাপও কমবে এবং ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
উপসংহার:
কোচিং স্কুলের প্রভাব এখনও কমেনি, তবে পরিবর্তনের বাতাস চলে এসেছে। অনলাইন শিক্ষা, স্বশিক্ষণ এবং পরীক্ষা প্রস্তুতির নতুন পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প পথ তৈরি করছে। এটি শুধু কোচিং নির্ভরতা কমাবে না, শিক্ষার প্রতি একটি স্বতঃস্ফূর্ত দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলবে।