মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ৪৩ বছর বয়সী মো. বদিউল আলম (নাঈম) পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ২৯। আর তার স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শারমীন আক্তার পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫।
তারা কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে ঢাকা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।
জানা গেছে, কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের দ্বাড়িয়াকান্দি গ্রামের মো. কনু মিয়ার ছেলে নাঈম পেশায় একজন ঠিকাদার। ১৯৯৭ সালে তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও নানা কারণে পরীক্ষা দেয়া হয়নি। ২০০৮ সালে বিয়ে করেন কুমিল্লার শারমীন আক্তারকে। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় তার। সন্তান গর্ভে আসায় ২০১০ সালে শারমীনেরও আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি।
পরে তারা দুজনই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় ভর্তি হন। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় নাঈম জিপিএ ৪ দশমিক ৯৫ এবং স্ত্রী শারমীন জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন।
বর্তমানে নাঈম-শারমীন দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। তাদের বড় মেয়ে বুশরা আক্তার বীথি স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও মেজো ছেলে রেদোয়ান আলম সিয়াম একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সবার ছোট মেয়ে তাসনীম (৫) এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি।
শারমীন আক্তার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ২০২০ সালে বড় মেয়ে বীথি ও সে সময়কার কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম লুনার উৎসাহে নতুন করে পড়াশোনার আগ্রহ জাগে তার। সেই থেকে মনের জোর এবং স্বজনদের উৎসাহে পড়াশোনা শুরু করে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করা সম্ভব হয়েছে।
বদিউল আলম নাঈম বলেন, বিয়ের আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ব্যবসা ও সাংসারিক চাপে শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। আমাদের এই সাফল্যে পরিবারসহ সবাই আনন্দিত।
এদিকে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন এই দম্পতি।