সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী সবসময় বলে আসছেন তার ছেলে আত্মহত্যা করেনি। পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) জানান, ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছিলেন, তাকে হত্যা করা হয়নি।’
বিষয়টি নিয়ে নীলা চৌধুরী প্রধান তীর ছোড়েন সামিরার দিকে। কিন্তু সামিরা এ বিষয়ে খোলাসা করে কখনও কিছু বলেননি। তবে তিনি মনে করছেন এখন তার কথা বলার সময় হয়েছে। তাইতো গত ১৯ সেপ্টেম্বর সালমানের জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।
সালমান শাহর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র্যাব, পিবিআই একে একে মামলাটির তদন্ত করে। চলেছে বিচার বিভাগীয় তদন্তও। সব কটি তদন্ত প্রতিবেদনে একে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হলেও প্রতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ার পর পরিবারের আপত্তির (নারাজি) মুখে তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হয়।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সামিরা বলেন, ‘ইমন (সালমান শাহর ডাকনাম) মেন্টালি সুইসাইডাল বাই নেচার। এর আগে তিনবার সুইসাইডের চেষ্টা করেছে। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ড চেক করলে জানা যাবে। ওখানে দুবারের রেকর্ড আছে। আরেক হাসপাতালে একবার আছে। তিনটাই আমার বিয়ের আগে। তিনটা ঘটনাই আমি জানি। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে করেছিল। আরেকবার আমাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য। তৃতীয়বার ওর কিছু একটা হয়েছিল, সেটার জন্য এমনটা করেছিল।’
নীলা চৌধুরীকে নিয়ে সামিরা বলেন, ‘উনি আমার শাশুড়ি ছিলেন; কিন্তু আমি বলতে পারি উনার সঙ্গে কেউ থাকতে পারবে না। দেখতে সুন্দর হলেও মনটা একেবারেই অসুন্দর। খুবই প্রতিশোধপরায়ন। আমাকে বিয়ের আগে বেশ আদর যত্ন করতো। কিন্তু বিয়ের পর শুরু হয় নির্যাতন। আমার গায়ে পর্যন্ত হাত তুলেছে। যেদিন আমার গায়ে হাত তোলে সেদিন ইমন ছিল বান্দরবান, শুটিংয়ে। এই কথা শুনে সব কিছু ফেলে ও রওনা দেয়। ঢাকা ফিরে আমাকে নিয়ে ইস্কাটনে আলাদা বাসায় ওঠে।’
সালমান শাহর নায়িকা প্রসঙ্গে সামিরা বলেন, ‘ইমন সবসময় কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকতে চাইত। ওভাবেই ও ছবির গল্প চুজ করতো। ওর প্রথম সিনেমা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামতে’ কাজ করে মৌসুমীর সঙ্গে। ওদের জুটিটা ছিল অসাধারণ।’ ছোটবেলার বন্ধু প্রসঙ্গে কথা উঠলে সামিরা বলেন, ‘মৌসুমীকে এমনটা বলতে শুনেছি কিন্তু ইমন এরকমটা কখনও কিছু বলেনি আমাকে। তবে ওদের জুটিটা ভালো ছিল, দর্শকও পছন্দ করেছিল। কিন্তু সমস্যাটা তৈরি হয় নীলা চৌধুরীর জন্য। প্রয়াত সোহান ভাই তার সাক্ষাৎকারে বিষয়টি বিস্তারিত বলেছে। একটি বাথরুমকে কেন্দ্র করে মৌসুমীর মায়ের সাথে সমস্যা তৈরি হয় নীলা চৌধুরীর। জটিলতার পরবর্তীতে মৌসুমীর সঙ্গে সাইন করা সিনেমাগুলো ছাড়া আর কাজ করেনি ইমন।’
সালমান শাহর মৃত্যুর জন্য তার মা শাবনূরকেও দোষী করেন। সালমান শাহর জীবনে কি তাহলে শাবনূরও ছিল? প্রেমের গুঞ্জন কী তাহলে সঠিক? বিষয়টি নিয়ে সামিরা পরিষ্কার করেন, ‘শাবনূরের গল্পটা বলতে গেলে অনেক কথা বলতে হবে। তবে ছোট করে যদি বলতে হয় তাহলে আমি বলবো ওর সঙ্গে সালমান শাহর সম্পর্ক ছিল। আর আমি সেকারণে বাড়ি ছেড়ে বাবার বাসায় চলে যাই। আমাকে নিতে এলেও আমি যাব না বলে দিই। কিন্তু পরিবার আর ইমনের প্রচেষ্টায় আবার ফিরে আসি। কিন্তু কিছু শর্ত ছিল। শাবনূরের সঙ্গে সে কোনো ছবি করতে পারবে না। যেগুলো সাইন করা ছিল সেগুলো ব্যতিত। ও আমার সব শর্ত মেনেও নিয়েছিল।’