

ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার থালাপতি বিজয় তার অভিনয় দক্ষতা ও ক্যারিশম্যাটিক ব্যক্তিত্বের জন্য তুমুল জনপ্রিয়। সম্প্রতি, তিনি চেন্নাইয়ে তার রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগাম (টিভিকে) আয়োজিত একটি ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। সেই অনুষ্ঠানে তাকে সাদা পোশাক ও টুপি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়, এমনকি তিনি নামাজও আদায় করেন এবং দোয়ায় অংশ নেন। তার এই উপস্থিতির কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গুঞ্জন ওঠে, থালাপতি বিজয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন!
গুঞ্জনের সূত্রপাত
গত ৭ মার্চ শুক্রবার, চেন্নাইয়ে রমজান উপলক্ষে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিজয়। অনুষ্ঠানটি ছিল তার দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগাম-এর উদ্যোগে আয়োজিত, যেখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ আমন্ত্রিত ছিলেন। বিজয় নিজেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে ইফতার করেন, নামাজে অংশ নেন এবং দোয়া করেন। এর পরপরই তার কিছু ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
গুঞ্জনের বিস্তার
সাদা পোশাক, মাথায় টুপি, নামাজে অংশগ্রহণ—এই বিষয়গুলোই অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি করে, বিজয় কি সত্যিই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দাবি করতে থাকেন, থালাপতি বিজয় ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে, তার পরিবারের কাছ থেকে বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সত্যতা যাচাই
বিশ্বস্ত সংবাদমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নাল এবং তথ্য যাচাই-বাছাই সংস্থা রিউমর স্ক্যানার-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, থালাপতি বিজয় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। তার এই ইফতার পার্টিতে অংশ নেওয়া ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার একটি উদাহরণ।
বিজয় একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান। তার বাবা এস.এ চন্দ্রশেখর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এবং মা শোভা চন্দ্রশেখর হিন্দু। ফলে, তিনি ছোটবেলা থেকেই দুই ধর্মের প্রভাব পেয়েছেন এবং সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার অংশগ্রহণ নতুন কিছু নয়। এর আগেও বিজয় মন্দিরে পূজা দিতে গেছেন এবং অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবে যোগ দিয়েছেন।
কেন ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ?
থালাপতি বিজয় বর্তমানে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে ব্যস্ত। তার দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগাম ইতিমধ্যে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে কাজ করছে। রাজনৈতিকভাবে সফল হতে হলে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাটা গুরুত্বপূর্ণ। এই ইফতার মাহফিল ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্প্রীতির অংশ।
বিজয়ের রাজনৈতিক যাত্রা আরও শক্তিশালী হচ্ছে, এবং আগামী দিনে তাকে আরও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যেতে পারে। তিনি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তার কর্মের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার বার্তা দিতে চান।