
পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার যুবক মো. সাগর (২০) মালয়েশিয়ায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, দেড় বছর আগে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়, কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর থেকেই শুরু হয় তার নির্যাতন। বর্তমানে সাগরকে জিম্মি করে মুক্তিপণের টাকা চাওয়া হচ্ছে।
সাগরের মা, বিউটি বেগম, ২ মার্চ বাউফল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার ছেলেকে ফেরত পেতে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। বিউটি বেগম বলেন, "আমার ভাই সোহরাব প্যাদা এবং তার শ্যালক আমিন হাওলাদার অনেক মানুষকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। আমার ভাই আমিনের মাধ্যমে আমার ছেলেকে মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং ৫ লাখ টাকা নেয়। আমি ধারদেনা করে টাকা জোগাড় করে দিই।"
বিউটি বেগম আরও জানান, "দেড় বছর আগে আমার ছেলে সাগরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি চাকরি না পেয়ে উল্টো নির্যাতনের শিকার হন। এখন তারা আমাদের কাছ থেকে আরও সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করছে। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।" তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে আমিন তাকে ফোন করে তার ছেলেকে মারধর করেছে এবং ফোনে সাগরের কান্নার শব্দ শুনেছেন।
সাগরের মামা মো. ইউসুফ জানান, ২০২৩ সালে দালাল আমিন প্রথমবার সাগরকে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সে সময় থাইল্যান্ডে আটকা পড়ে এক মাস ১৭ দিন জেলে ছিল। পরে থাইল্যান্ড সরকার তাকে দেশে ফেরত পাঠায়। এরপর আমিন তাকে বৈধ ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে যান, তবে সেখানে যাওয়ার পর থেকেই আমিন সাগরকে নির্যাতন করে এবং মুক্তিপণ দাবি করতে শুরু করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত আমিন হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অন্যদিকে, সাগরের মামা সোহরাব প্যাদা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, "আমার শ্যালকের মাধ্যমে সাগরকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এজন্য আমি অনেক টাকা খরচ করেছি, যা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। তবে সাগরের ওপর কোনো নির্যাতনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।"
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, "বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।"
এ ঘটনায় সাগরের পরিবার দ্রুত তার মুক্তি এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।