১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি জাতীয় দিবস নয়; এটি মুক্তিযুদ্ধের গৌরব, আত্মত্যাগ ও স্বাধীনতার স্মৃতি বহন করে। দেশের বাইরে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য এই দিন মানে দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা এবং নতুন প্রজন্মকে ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করার অমূল্য সুযোগ। বিজয় দিবস উদযাপনে তারা নিজেদের মিলিত করে, স্মরণ করে এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখে।
দেশ থেকে দূরে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিজয় দিবসকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে উদযাপন করে। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি কেন্দ্রগুলো, দূতাবাস এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, দেশাত্মবোধক গান, কবিতা পাঠ এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই আয়োজনগুলো কেবল স্মৃতির বিন্যাস নয়; বরং এগুলো প্রবাসীদের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও ঐক্য বজায় রাখে।
নতুন প্রজন্মের সঙ্গে ইতিহাসের সংযোগ স্থাপন প্রবাসী পরিবারগুলোর জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। শিশুরা ও কিশোররা বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প শোনে, নৃত্য ও নাটক উপভোগ করে এবং প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগ্রামের চিত্র দেখায়। অনেক প্রবাসী পরিবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশ থেকে দূরে থাকা সদস্যদেরও অনুষ্ঠানে যুক্ত করে। এর ফলে নতুন প্রজন্মও স্বাধীনতা, দেশপ্রেম এবং সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হয়।
বিজয় দিবস উদযাপনে শুধু অনুষ্ঠানই নয়, প্রবাসী বাংলাদেশীরা নিজেদের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা ও দেশপ্রেম ভাগাভাগি করে। অনেকেই বলেন, “দেশে থাকলে হয়তো আরও অন্যরকমভাবে উদযাপন করা যেত, কিন্তু দূরে থেকেও আমরা আমাদের বিজয় দিবস মনে রাখি এবং নতুন প্রজন্মকে শিখাই, দেশের জন্য গর্ব করা মানে কী।” এই অনুভূতিই প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিজয় দিবস উদযাপনের মূল বার্তা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং প্রজন্মের সংযোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা নিশ্চিত করে যে, দেশের বাইরে থেকেও জাতীয় চেতনাকে ধরে রাখা সম্ভব। বিজয় দিবস তাদের কাছে কেবল ইতিহাসের দিন নয়; এটি জাতীয় গর্ব, সংহতি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অমোঘ সংযোগের প্রতীক।