
ইতালির পুলিশ দুই বাংলাদেশি নাগরিককে শেনজেন ভিসা সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগে আটক করেছে। অভিযুক্তরা আরেক বাংলাদেশি অভিবাসীকে কাজের ভিসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১৬ হাজার ইউরো হাতিয়ে নেয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রস্তাব দেয় এবং বিনিময়ে তাকে ইতালির বৈধ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার আশ্বাস দেয়। তবে, টাকা পাঠানোর পর ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন যে তার ভিসার জন্য কোনো আবেদনই জমা দেওয়া হয়নি এবং অভিযুক্তরা তার সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী ইতালির বোলোগনা অঞ্চলের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশিদের জমা দেওয়া ভুয়া নথির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইতালি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। ইতালীয় কর্তৃপক্ষ বারবার বিদেশিদের সতর্ক করে আসছে যে, শেনজেন ভিসা শুধুমাত্র সরকারি চ্যানেল (ভিসা সেন্টার বা দূতাবাস) থেকেই ইস্যু করা হয়। কোনো ব্যক্তি বা প্রাইভেট এজেন্সি সরাসরি ভিসা দিতে পারে না।
এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়। গত জানুয়ারিতেও ইতালি কর্তৃপক্ষ পাঁচ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভুয়া নথি তৈরি ও নকল বিয়ের মাধ্যমে রেসিডেন্স পারমিট ও কাজের অনুমতি দেওয়ার প্রতারণার তদন্ত শুরু করে।
২০২৩ সালে ঢাকার ইতালীয় দূতাবাসে বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি শেনজেন ভিসার আবেদন করেছিল—মোট ৩৯,৭২৯টি আবেদনের মধ্যে ৩৪% ইতালির জন্য ছিল। তবে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের জন্য ইতালির ভিসা অনুমোদনের হার মাত্র ৪০% ছিল, যা ইতালিকে বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ভিসা প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে।
ইতালীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভিসা সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম বা প্রতারণার শিকার হলে অবিলম্বে স্থানীয় পুলিশ বা দূতাবাসকে জানানো উচিত। এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে শুধুমাত্র সরকারি ভিসা কেন্দ্র বা অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, অনেকেই এখন ভিসা প্রাপ্তির জন্য বৈধ পদ্ধতি অনুসরণে আরও সতর্ক হচ্ছেন।