আজকের ব্যস্ত জীবনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়ানো কখনোই সহজ কাজ নয়। বিশেষ করে শীত বা বর্ষার সময়ে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থা। সৌভাগ্যবশত, বাংলাদেশি রান্না ও বাজারে এমন কিছু সহজলভ্য খাবার আছে, যা নিয়মিত খেলে রোগের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
১) ফল ও সবজি: প্রাকৃতিক ভিটামিন সেন্টার
আম, কমলা, লেবু, মিষ্টি লেবু: ভিটামিন সি-এর সমৃদ্ধ উৎস। ঠান্ডা ও ফ্লু প্রতিরোধে সাহায্য করে।
লাল শাক, পটল, বাঁধাকপি: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ-সমৃদ্ধ, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
টমেটো ও মরিচ: লাইকোপিন ও ক্যাপসাইসিনের কারণে শরীরে সংক্রমণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২) মসলা ও হার্ব: ছোট কিন্তু শক্তিশালী
রসুন ও আদা: প্রাচীনকাল থেকে সংক্রমণ রোধে ব্যবহৃত, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস কমাতে সাহায্য করে।
হলুদ: অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শক্তিশালী।
কাঁচা মরিচ ও দারচিনি: রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, শরীরকে উষ্ণ রাখে।
৩) ডাল, শিম ও প্রোটিন
মসুর ডাল, ছোলা, রাজমা: প্রোটিনের ভালো উৎস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মাছ ও হাঁস-মুরগির সাদা মাংস: ওমেগা-৩ এবং জিংকের উৎস, যা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।
৪) দই ও ফারমেন্টেড খাবার
দই, মিস্টি দই, চিড়া–দই মিশ্রণ: প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, পাচনতন্ত্র সুস্থ রাখে, ইমিউনিটি বাড়ায়।
আচার ও কম লবণযুক্ত ফারমেন্টেড সবজি: অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ব্যালান্স বজায় রাখে।
৫) পানীয় ও তরল
গরম চা বা আদা–লেবুর পানি: ঠান্ডা লাগা কমায়, হালকা জ্বালাপোড়া উপশম দেয়।
ফল ও শাকসবজির জুস: ভিটামিন ও খনিজের সহজলভ্য উৎস।
খাওয়ার সময় ও অভ্যাস
প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গে মসলা ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করা
প্রক্রিয়াজাত ও ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলা
পর্যাপ্ত পানি ও গরম তরল পান করা
রাতের খাবার হালকা, তবে পুষ্টিকর রাখুন
বাংলাদেশি খাদ্যাভ্যাসে সহজেই এই খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব—চালের সঙ্গে ডাল, সেদ্ধ বা ভাজা সবজি, মাছ বা মুরগি, সঙ্গে মসলা এবং দই। নিয়মিত এমন খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকে, শীত বা বর্ষায় সাধারণ অসুস্থতা সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায়।