
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করার জন্য শান্তির প্রচেষ্টা জরুরি। তবে তিনি সন্দিহান যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সংঘাত সমাধানে প্রস্তুত।
সোমবার হোয়াইট হাউসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, পরিস্থিতি ও তথ্য দেখে আমি মনে করি না পুতিন এখন শান্তির জন্য প্রস্তুত। তবে হতে পারে আমি অতিরিক্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের আশাবাদ গুরুত্বসহকারে নেওয়া উচিত। পুতিনের সঙ্গে কোনো চুক্তি সম্ভব হলে তা ভালো খবর এবং এ ধরনের চুক্তি আনতে সবরকম প্রচেষ্টা করতে হবে।
ম্যাক্রোঁ জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ নেন। এর মধ্যে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত।
তিনি বলেন, একজন আগ্রাসী আছে, সেটি হলো রাশিয়া। এমন একটি দেশ যা মানুষ হত্যা করছে, শিশু হত্যা করছে এবং কোনো বৈঠক বা শান্তি সম্মেলনে অংশগ্রহণে অনীহা দেখাচ্ছে। তাই আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সমান পরিস্থিতি তৈরি করতে পারি না।
ম্যাক্রোঁ যোগ করেন, ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে হবে। শান্তি চুক্তি হলে, তা নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া কার্যকর হবে না।
তিনি উল্লেখ করেন যে, ট্রাম্প শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেয়েছেন, যা ইতিবাচক।
শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নে ম্যাক্রোঁ সতর্ক করেন যে, বিশ্বের নেতাদের প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অবস্থায়ও রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও কর্মকর্তাদের জন্য শান্তি আলোচনা করা অসম্ভব যখন তাদের দেশ ধ্বংস হচ্ছে এবং নিরীহ মানুষ নিহত হচ্ছে।
ম্যাক্রোঁ বিশ্বাস করেন, কোনো ভূখণ্ড বিনিময় হওয়া উচিত নয়। এখন যদি আমরা ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনা করি, তা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও জনগণের মধ্যেই হতে হবে।
সোমবারের হোয়াইট হাউস বৈঠকে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইয়েন, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরজ ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্হিয়া মেলোনি উপস্থিত ছিলেন, যা বৈঠকের গুরুত্ব নির্দেশ করে।
ম্যাক্রোঁ ইউরোপের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে সবচেয়ে স্পষ্ট মত প্রকাশকারী নেতাদের একজন। মার্চে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, রাশিয়া পুরো মহাদেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনে যা ঘটছে তা ইউক্রেনের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণই, কিন্তু পুরো ইউরোপের নিরাপত্তার জন্যও। কারণ আমরা এমন একটি পরমাণু শক্তিকে সীমিত করার চেষ্টা করছি যা আন্তর্জাতিক সীমানার কোনো সম্মান রাখছে না। ইউক্রেনে আমাদের কার্যক্রম সমগ্র বিশ্বের কাছে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতার পরীক্ষাও হবে।
সূত্র: এনবিসি নিউজ