পহেলগাম হামলার পর যুদ্ধের আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছে নয়াদিল্লি

পহেলগাম হামলার পর যুদ্ধের আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছে নয়াদিল্লি
প্রকাশিত

নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর। ভারত এখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন এবং নয়াদিল্লিতে শতাধিক কূটনীতিকের জন্য একটি বিশেষ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে।

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, মোদীর প্রচেষ্টা উত্তেজনা কমানোর জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের আগে আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করতেই নেওয়া হচ্ছে। যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি, তবে মোদী তার সাম্প্রতিক ভাষণে 'সন্ত্রাসের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার' প্রতিশ্রুতি দেন।

কাশ্মীর অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর ধরপাকড় জোরদার হয়েছে এবং সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গুলিবিনিময়ের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে, ভারত পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোর পানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পাকিস্তানি কূটনীতিক ও নাগরিকদের দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জবাবে পাকিস্তানও একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে।

কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীরা ভারতের বিভিন্ন শহরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যার ফলে অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। যদিও হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো গোষ্ঠীকে দায়ী করেনি, তবে কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসবাদে সম্পৃক্ততার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রযুক্তিগত গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

উত্তেজনার মধ্যে ইরান ও সৌদি আরব মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে, আর জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে সমাধান খুঁজে নেবে এবং তিনি কোনো পক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চান না।

বিশ্লেষক ড্যানিয়েল মার্কি বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পরবর্তী সময়ের তুলনা করেছেন, যখন ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়েছিল। এবারও ভারত 'কিছু চমকপ্রদ' পদক্ষেপ নিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও উভয় দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার থাকায় পরিস্থিতি এখনো 'পরিচালিত বৈরিতার' পর্যায়ে আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন বলেন, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে দ্রুত পরিবর্তনশীল অবস্থা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কড়া নজর কাড়ছে। শেষ পর্যন্ত ভারত কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয় কিনা এবং সেটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
কাশ্মীর হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মোদী আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইছেন। সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। কাশ্মীরে ধরপাকড় চলছে। ইরান, সৌদি আরব শান্তির প্রস্তাব দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। এখন দেখার বিষয় ভারত আদৌ সামরিক হামলা চালায় কিনা।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com