
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে ইসরাইলি গণহত্যা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস। গাজা সিটি ও উপত্যকার অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক হামলার মধ্যে গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় এই আহ্বান জানায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। আল জাজিরা।
গাজা সিটি দখলে নিতে অভিযানের দ্বিতীয় ধাপ শুরু করেছে দখলদার বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। চলমান হামলায় একদিনে প্রাণ গেছে অন্তত ৭৩ ফিলিস্তিনির। এর মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছেন ৪৩ জন। এছাড়া বেশ কয়েকজন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদন মতে, গাজার ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করছে ইসরাইলি বাহিনী। তারই অংশ হিসেবে বুধবার আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতে থাকা পুরো পরিবারকে একসঙ্গে হত্যা করা হয়েছে। গাজায় বাস্তুচ্যুত সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে বলেন, ‘আমার ভাইকে তার ঘরেই মেরে ফেলেছে। তার স্ত্রী-সন্তানসহ সবাইকে শেষ করে দিয়েছে। কেউ বেঁচে নেই।’
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গাজা সিটিতে গত তিন সপ্তাহে অন্তত ১০০ রোবট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো আবাসিক ব্লক ও মহল্লা গুঁড়িয়ে দিয়েছে দখলদার বাহিনী। গত ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গাজা সিটিতেই মারা গেছেন প্রায় ১ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি।
উত্তর গাজা সিটিতে আল-জারিসি পরিবারের বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় হামাস এটিকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের জীবন ধ্বংসে এটি এক নিয়মতান্ত্রিক অভিযানের অংশ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অবরোধের কারণে খাদ্য ও সহায়তা প্রবেশে কড়াকড়ি থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ আরও ছয়জন অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছে। অবরোধ চলাকালে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত কারণে ৩৬৭ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, এর মধ্যে ১৩১ শিশু।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে সমস্ত ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি দিয়ে গাজায় একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতি মানতে প্রস্তুত আছে। সংগঠনটি আরও বলেছে, তারা গাজায় স্বতন্ত্র জাতীয় প্রশাসন গঠনের বিষয়টিকে সমর্থন করে, যা উপত্যকার সব কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে হামাসের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাৎজ বলেছেন, তেল আবিবের দেয়া শর্ত মেনে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে নয়ত গাজা সিটি ধ্বংস হয়ে যাবে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, হামাস যদি সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাবে এবং গাজায় যুদ্ধ শেষ হবে।