
স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়া আর মানবে না বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপ ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে তারা স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু পরিস্থিতি ইউরোপ ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত ল্যান্ড-বেজড মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের প্রকৃত মোতায়েনের দিকে এগোচ্ছে, তাই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছে যে অনুরূপ অস্ত্রের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার শর্ত আর থাকছে না।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের এক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি পারমাণবিক সাবমেরিনকে ‘উপযুক্ত অঞ্চলে’ স্থানান্তরের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। যা নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। আর তার মধ্যেই রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি এলো।
গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর উসকানির জবাবে মস্কোকে হয়তো ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হতে পারে।
ডিসেম্বরে লাভরভ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তিকে বলেছিলেন, মস্কোর এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা ‘কার্যত আর টেকসই নয় এবং তা পরিত্যাগ করতে হবে’।
লাভরভ সংবাদ সংস্থাটিকে আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ঔদ্ধত্যের সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের সতর্কতা উপেক্ষা করে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এই শ্রেণির অস্ত্র মোতায়েনের দিকে এগিয়ে গেছে।’
২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। মস্কো তখন বলেছিল, ওয়াশিংটন এমন অস্ত্র মোতায়েন না করলে তারাও মোতায়েন করবে না।
১৯৮৭ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের মধ্যে স্বাক্ষরিত আইএনএফ চুক্তি ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র—এই পুরো শ্রেণির অস্ত্রকে নির্মূল করেছিল।
সূত্র: আল জাজিরা, এনডিটিভি