

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সমর্থিত প্রেসিডেনশিয়াল লিডারশিপ কাউন্সিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। কাউন্সিলের প্রধান রাশাদ আল-আলিমি নির্দেশ দিয়েছেন, ইউএই-এর সব সামরিক বাহিনীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেনের ভূখণ্ড ত্যাগ করতে হবে।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে আল-আলিমি বলেন, এটি ইয়েমেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্ন। একই সঙ্গে তিনি সৌদি আরব ও জোটের প্রতি সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি ঘোষণা করেন, ইউএই-এর সঙ্গে যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করা হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার জন্য আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে অবরোধ আরোপ করা হয়েছে এবং দেশজুড়ে ৯০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
এদিকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট জানিয়েছে, ইয়েমেনের মুকাল্লা বন্দরে একটি ‘সীমিত সামরিক অভিযান’ চালানো হয়েছে। সৌদি প্রেস এজেন্সির (SPA) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোরে জোটের বিমান বাহিনী বন্দরে নামানো অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
জোটের মুখপাত্র তুর্কি আল-মালকি বলেন, অনুমতি ছাড়াই দুটি জাহাজ মুকাল্লা বন্দরে প্রবেশ করে ট্র্যাকিং সিস্টেম বন্ধ করে দেয় এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী দক্ষিণ ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এসটিসি)-এর জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও যুদ্ধযান খালাস করে। এসব অস্ত্র ইয়েমেনে অস্থিতিশীলতা বাড়ানোর হুমকি সৃষ্টি করায় হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
রয়টার্সকে দেওয়া দুটি সূত্র জানিয়েছে, বিমান হামলাটি বিশেষভাবে সেই ডক লক্ষ্য করে করা হয়, যেখানে অস্ত্র খালাস করা হয়েছিল। জোটের দাবি, এতে কোনো হতাহত বা সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এসটিসি সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউএই-এর সরাসরি সহায়তায় হাদরামাউত ও আল-মাহরা সহ পূর্ব ইয়েমেনের বিভিন্ন এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে। প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিলের প্রধান আল-আলিমি এসব অঞ্চল থেকে এসটিসি বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন এবং বলেছেন, তাদের তৎপরতা ইয়েমেনের জাতীয় ঐক্যের জন্য হুমকি।
অন্যদিকে, ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা এখনও ইয়েমেনের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, যার মধ্যে রাজধানী সানা ও গুরুত্বপূর্ণ হোদেইদা বন্দর রয়েছে।
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সংযম প্রদর্শন এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইয়েমেনে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতায় ইউএই-এর সমর্থন সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা এবং গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে।