

২৯ ঘণ্টা ধরে আকাশে উড়ে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু করল চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস। চীনের সাংহাই থেকে যাত্রা শুরু করে আর্জেন্টিনার বুয়েনোস এইরেসে পৌঁছেছে ফ্লাইটটি।
গত ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় রাত ২টায় সাংহাই থেকে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইটটি গন্তব্যে পৌঁছায় স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে। নির্ধারিত সময়ের চেয়েও ১০ মিনিট আগে এটি বুয়েনোস এইরেসের ইজেইজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। মাঝখানে শুধু অকল্যান্ডে সামান্য বিরতি নেয় ফ্লাইটটি।
বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর মডেলের ৩১৬ আসনের এই বিমানটি জ্বালানি নেওয়া এবং 'ক্রু রোটেট' (কর্মীদের পালাবদল) এর জন্য অকল্যান্ডে থেমেছিল। এই বিরতির কারণে ফ্লাইটটি বিশ্বের দীর্ঘতম 'নন-স্টপ' ফ্লাইটের রেকর্ড না পেলেও, যাতায়াতের মোট সময় হিসাবে এটিই এখন বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক বিমান রুট।
সাংহাই থেকে আর্জেন্টিনা যেতে বিমানটির সময় লেগেছে ২৫ ঘণ্টার বেশি। ফিরতি পথে আরও চার ঘণ্টা বেশি সময় লাগায় এটি বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক ফ্লাইটের খেতাব পেয়েছে।
এই নতুন মাইলফলক অর্জন উপলক্ষে সাংহাই ও বুয়েনোস এইরেসে উৎসবের আয়োজন করা হয়। অকল্যান্ডেও বিমানটিকে স্বাগত জানানো হয়।
চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনসের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নতুন রুটটি সাংহাই ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটের অভাব পূরণ করল। তারা আরও জানায়, এটি প্রশান্ত মহাসাগরের বিপরীত প্রান্তকে যুক্ত করে একটি 'দক্ষিণাঞ্চলীয় করিডর' খুলে দিয়েছে এবং তিনটি মহাদেশের মধ্যে আকাশপথে ভ্রমণে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এর আগে বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক ফ্লাইটের রেকর্ড ছিল সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের দখলে। তাদের ১৯ ঘণ্টার নন-স্টপ ফ্লাইট নিউইয়র্ক থেকে সিঙ্গাপুর যেত। তবে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস এখন সে রেকর্ড অতিক্রম করল।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার এয়ারলাইনস কান্তাস ২০২৭ সালে 'প্রজেক্ট সানরাইজ' নামের একটি ফ্লাইট চালু করার পরিকল্পনা করছে। সিডনি থেকে লন্ডন ও নিউইয়র্ক পর্যন্ত হবে এই ফ্লাইট। এর জন্য বিমানে অতিরিক্ত ২০ হাজার লিটারের জ্বালানি ট্যাংক থাকবে, যা বিমানটিকে টানা ২২ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে সাহায্য করবে।