
জাতিসংঘ বছরে ১ হাজারের বেশি রিপোর্ট প্রকাশ করে। কিন্তু এর বেশিরভাগই খুব একটা পড়া হয় না। সংস্থাটির কর্মপদ্ধতি ও ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে একটি অভ্যন্তরীণ সংস্কারমূলক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্ময়কর এই তথ্য।
২০২৫ সালে ৮০ বছর হবে জাতিসংঘের বয়স। সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিয়মিত বকেয়া পরিশোধ না করায় সাত বছর ধরে তারল্য সংকটে পড়ছে সংস্থাটি। আর তাই খরচ বাঁচানো হয় বিভিন্ন সংস্কারের লক্ষ্যে গত মার্চ মাসে ইউএন৮০টাস্কফোর্স চালু করেছেন মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর জাতিসংঘে ২৭ হাজার সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যাতে অংশ নেয় ২৪০টি সংস্থা ও কমিটি। এ সময়ে ১ হাজার ১০০টি রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রকে বিষয়টি জানিয়ে বলেন, প্রতি বছর হাজার হাজার রিপোর্ট তৈরি ও সভা আয়োজনের চাপ জাতিসংঘ ব্যবস্থাকে প্রায় ভেঙে পড়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বিপুল পরিমাণ সভা ও প্রতিবেদন আমাদের সবাইকে এক প্রকার চূড়ান্ত ক্লান্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
গুতেরেস বলেন, ‘এসব প্রতিবেদনের বেশিরভাগই খুব একটা পড়া হয় না। মাত্র পাঁচ শতাংশ প্রতিবেদন ৫ হাজার ৫০০ বারের বেশি ডাউনলোড হয়। আবার প্রতি পাঁচটির একটির ডাউনলোড সংখ্যা এক হাজারের নিচে। আর ডাউনলোড মানেই যে কেউ তা পড়ছে, সেটাও নয়।’
প্রতিবেদনে লক্ষ্য করা হয়েছে, সাধারণ পরিষদ বা নিরাপত্তা পরিষদের মতো সংস্থাগুলো থেকে হাজার হাজার ‘ম্যান্ডেট’ আসে, যা বাস্তবায়নের জন্য প্রচুর সভা ও প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়।
এছাড়া, জাতিসংঘ এ বছরও তীব্র অর্থসংকটে রয়েছে-গত সাত বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। সদস্য ১৯৩টি দেশের অনেকেই নিয়মিত ও সময়মতো চাঁদা দেয় না, যার ফলে বাজেট ঘাটতি হয় এবং কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এ অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রস্তাব হলো-সভা কমাতে হবে এবং প্রতিবেদনের সংখ্যা কমাতে হব, তবে যেগুলো তৈরি হবে, তা যেন সব ম্যান্ডেট পূরণে সক্ষম হয়।