পপিচাষে নিষেধাজ্ঞায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে আফগান কৃষকেরা: জাতিসংঘ

পপিচাষে নিষেধাজ্ঞায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে আফগান কৃষকেরা: জাতিসংঘ
প্রকাশিত

তালেবান সরকার তিন বছর আগে আফিম উৎপাদনের জন্য পপি চাষ নিষিদ্ধ করার পর থেকে উত্তর আফগানিস্তানের কৃষকেরা এখনো তাদের হারানো আয় পুনরুদ্ধার করতে পারেননি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

কাবুল থেকে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি)’র বরাত দিয়ে এএফপি সোমবার জানায়, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে চলতি বছরে আফগানিস্তানে পপি চাষের পরিমাণ কমে মাত্র ১০ হাজার ২০০ হেক্টরে (২৫ হাজার ২০০ একর) নেমে এসেছে, যা দেশটির ইতিহাসে ‘এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত সর্বনিম্ন মাত্রাগুলোর একটি’।

তবে এর ফলে পপি চাষের ভৌগোলিক অবস্থানেও পরিবর্তন এসেছে। দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উৎপাদন এলাকা থেকে চাষ সরে গিয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ তুলনামূলকভাবে কম এমন উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে বিস্তার লাভ করেছে।

সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অসুযায়ী তাজিকিস্তান সীমান্তবর্তী বাদাখশান প্রদেশে ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পপি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই প্রদেশসহ পার্শ্ববর্তী কুন্দুজ ও বালখে ‘গড়ে ৮৫ শতাংশ পরিবার পপি চাষ বন্ধ করার পর তাদের আগের আয় পুরোপুরি বা আংশিকভাবেও প্রতিস্থাপন করতে পারেনি’।

অনেক কৃষক এখন গম ও অন্যান্য শস্য চাষে ঝুঁকছেন। তবে ২০২৩ সালে ‘প্রতি হেক্টরে গম চাষ থেকে গড় আয় ছিল মাত্র ৭৭০ ডলার, যেখানে অপিয়াম পপি থেকে আয় হতো প্রতি হেক্টরে প্রায় ১০ হাজার ডলার’।

ইউএনওডিসির আঞ্চলিক প্রতিনিধি অলিভার স্টলপে বলেন, ‘এই আয়হানি শুধু পরিবার পর্যায়েই সীমাবদ্ধ নয়; এটি গ্রামীণ ক্রয়ক্ষমতা দুর্বল করছে, স্থানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কমিয়ে দিচ্ছে এবং দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।’

সংস্থাটি আফগানিস্তানে জাফরান, বাদাম, ভেষজ উদ্ভিদ এবং খরচ সহনশীল ও উচ্চমূল্যের ফল যেমন এপ্রিকট ও আঙুর চাষে উৎসাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে, যেগুলো শুষ্ক ও উচ্চভূমির পরিবেশের জন্য বেশি উপযোগী।

২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘদিন ধরে পপি থেকে প্রাপ্ত আয় আফগানিস্তানের অর্থনীতির একটি বড় অংশ ছিল।

গত মাসে ইউএনওডিসি জানায়, চলতি বছরে আফগানিস্তানে অপিয়াম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল আনুমানিক ২৯৬ টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩২ শতাংশ কম।

এতে কৃষকদের অপিয়াম বিক্রি থেকে আয় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে—২০২৪ সালের ২৬০ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে চলতি বছরে দাঁড়িয়েছে ১৩৪ মিলিয়ন ডলারে।

সরকারের মাদকবিরোধী কার্যক্রমবিষয়ক উপমন্ত্রীালয় এই প্রতিবেদনকে কৃষকদের ‘বাস্তবতা ও প্রকৃত চ্যালেঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন’ বলে স্বাগত জানিয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত এক প্রতিক্রিয়ায় কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ‘টেকসই গ্রামীণ উন্নয়ন এবং মাদক ফসল চাষের ওপর নির্ভরতা কমাতে’ নীতিমালা অনুসরণ করবে।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com