‘অবাধ্য’ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতার আভাস দিলো যুক্তরাষ্ট্র

‘অবাধ্য’ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতার আভাস দিলো যুক্তরাষ্ট্র
প্রকাশিত

কম দামে রুশ তেল কেনার প্রশ্নে ভারত ‘খানিকটা অবাধ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বা ট্রেজারিমন্ত্রী স্কট বেসেন্টে। তবে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইস্যুতে দীর্ঘদিনের মিত্র ও কৌশলগত অংশীদার এই দেশটির সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার আভাসও দিয়েছেন তিনি; আগামী অক্টোবরে হতে পারে এই সমঝোতা।

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “সাম্প্রতিক ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো বাণিজ্য চুক্তি ও বৈঠক মুলতবি অবস্থায় আছে। বিশেষ করে সম্প্রতি ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ও আলোচনার ক্ষেত্রে আমরা ভারতের খানিকটা অবাধ্যতা লক্ষ্য করছি।”

সম্প্রতি ভারতের ওপর অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক জারি করায় টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে। এই টানাপোড়েনের মূলে রয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেল।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বেঁধে দেওয়ার পর থেকে কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ভারত। বর্তমানে দেশটি রুশ জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

সম্প্রতি এ ব্যাপারটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন ট্রাম্প। একাধিকবার তিনি অভিযোগ করেছেন, রুশ তেল তেল ক্রয়ের মাধ্যমে রাশিয়াকে যুদ্ধের জন্য অর্থ যোগাচ্ছে ভারত। জবাবে ভারত বলেছে, দেশের জনসাধারণকে কম দামে জ্বালানি তেল সরবরাহ করার জন্যেই রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ভারত।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের ওপর নির্ধারিত রপ্তানি শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহনের দেড় মাস পর মার্চ মাসে ভারতের ওপর নির্ধারিত শুল্ক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেন ট্রাম্প, যা গত ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর করা হয়েছে।

রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ৬ আগস্ট ভারতের ওপর অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। ফলে দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত শুল্কের পরিমাণ বেড়ে পৌঁছায় ৫০ শতাংশে, যা ভারতের অর্থনীতির জন্য একটি বড় আঘাত।

এই পদক্ষেপ নেওয়ার কারণ হিসেবে স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প লেখেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি, ভারত সরকার বর্তমানে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে রুশ ফেডারেশন থেকে তেল আমদানি করছে... আমার বিচারে মনে হচ্ছে, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর অ্যাড ভ্যালোরেম শুল্ক (কোনও পণ্যের ওপর সরকার নির্ধারিত খুচরা বিক্রয় মূল্যের ওপর নির্দিষ্ট হারের শুল্ক) আরোপ করা প্রয়োজন।”

ট্রাম্পের এই শুল্ক চাপানোর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা এবং জনগণকে ন্যায্য মূল্যে তেল সরবরাহ করাকে ভারত তার জাতীয় স্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই স্বার্থ রক্ষায় যাবতীয় পদক্ষেপ ভারত গ্রহণ করবে।”

মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারিমন্ত্রী বলেন, “আশা করছি যে আগামী অক্টোবরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে আমরা বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব। এটা হয়তো কিছুটা উচ্চাভিলাষী আকাঙ্ক্ষা, তবে আমি মনে করি যে আমরা ভাল অবস্থানে আছি।”

“এবং শুধু ভারতের সঙ্গেই নয়, অক্টোবর শেষ হওয়ার আগে আরও কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে আমদের বাণিজ্য সমঝোতা হতে পারে”, সাক্ষাৎকারে বলেন স্কট বেসেন্ট।

সূত্র : ফার্স্ট পোস্ট

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com