ওবামার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ তুললেন ট্রাম্প, গ্রেপ্তারের দাবি

ওবামার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ তুললেন ট্রাম্প, গ্রেপ্তারের দাবি
প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ অভিযোগ তুলেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ওবামাকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

২০১৬ সালের নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে এই দাবি করেছেন তিনি। বুধবার (২৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিরুদ্ধে আবারও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে আমেরিকান জনতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দিয়েছে ওবামা প্রশাসন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট “বংবং” মার্কোস জুনিয়রের সঙ্গে এক বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, “এই ষড়যন্ত্রচক্রের প্রধান ছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা, বারাক হুসেইন ওবামা। তিনি অপরাধী। এটা রাষ্ট্রদ্রোহ। ওরা নির্বাচন চুরি করতে চেয়েছিল, ধোঁকা দিতে চেয়েছিল, এমন কাজ করেছে যা অন্য দেশেও কল্পনা করা যায় না।”

ট্রাম্প অবশ্য এর আগেও নির্বাচন জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত ভুয়া দাবি তুলে আলোচিত হয়েছেন। বিশেষ করে ২০২০ সালের নির্বাচনে নিজের পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করার সময়। কিন্তু এবার ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গে ফিরে গিয়েই তিনি “হিসাব মেটানোর” ইঙ্গিত দিচ্ছেন। সেই নির্বাচনেই রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল, যাতে ট্রাম্প জয়ী হয়েছিলেন।

২০১৬ সালের শেষ দিকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দ্বিতীয় মেয়াদ যখন শেষের দিকে তখন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ জানায়, রাশিয়া ট্রাম্পকে জেতাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। এর জবাবে ওবামা রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেন এবং বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

এরপর ২০১৭ সালে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি সমন্বিত প্রতিবেদনে আরও বিশদভাবে রাশিয়ার প্রভাব প্রয়োগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

তবে ২০১৯ সালে বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট মুলারের তদন্তে দেখা যায়, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবির ও রাশিয়ার মধ্যে সরাসরি যোগসাজশের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেদনটি আবারও নিশ্চিত করে, রাশিয়া “ব্যাপক ও সংগঠিত উপায়ে” নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল।

ট্রাম্প বলছেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এই তদন্ত আসলে তার ওপর রাজনৈতিক হামলা। তিনি বলেন, “ওরা নির্বাচন কারচুপি করতে চেয়েছিল। ওরা হাতেনাতে ধরা পড়েছে। এজন্য কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”

অবশ্য ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পেছনে মদত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড। তিনি গত ১৮ জুলাই একটি বিবৃতিতে দাবি করেন, “ওবামা এবং তার নিরাপত্তা উপদেষ্টারা গোয়েন্দা তথ্য বিকৃত করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বহু বছরব্যাপী এক ধরনের ‘ক্যু’ পরিকল্পনার ভিত্তি তৈরি করেছিলেন।”

গ্যাবার্ড বলেন, এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে “ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানো ও জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা” করা হয়েছিল। তিনি আরও জানান, এই ষড়যন্ত্রে জড়িত প্রত্যেককে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা উচিত এবং তিনি এই সংক্রান্ত নথি বিচার বিভাগে জমা দিয়েছেন।

তবে তুলসি গ্যাবার্ডের প্রতিবেদনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। অনেকে বলছেন, তিনি ভিন্নমত বা আলাদা প্রতিবেদনের উপসংহারগুলো গুলিয়ে ফেলেছেন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উপস্থাপন করেছেন।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com