
গোমূত্র ও রুহ আফজা নিয়ে ভারতে ফের বিতর্ক শুরু করেছেন যোগগুরু বাবা রামদেব। এ নিয়ে মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়েছেন তিনি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে শরবত রুহ আফজা নিয়ে রামদেব বাবার একটি বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তার কোম্পানি পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের বানানো শরবতের প্রচারণায় নেমে ‘রুহ আফজা’ নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে রামদেব বলেন, দেশে একটি কোম্পানি আছে যারা শরবত তৈরি করে। আপনারা সেই শরবত ব্যবহারও করেন। কিন্তু, এই শরবত বিক্রির টাকা যায় মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরি করতে।
যদিও রামদেব এ প্রসঙ্গে হামদর্দ কোম্পানির রুহ আফজার নাম উল্লেখ করেননি। কিন্তু, তার ইঙ্গিত যে সেদিকেই ছিল, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি।
রামদেব ভিডিওতে বলেছিলেন, আপনারা যদি ওই শরবত খান, তাহলে মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরি হবে দেশে। কিন্তু, যদি আপনারা পতঞ্জলির এই শরবত খান, তাহলে গুরুকুল নির্মাণ হবে। আচার্য কুলম গড়ে উঠবে, পতঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয় আরও বড় হবে এবং ভারতীয় শিক্ষা পর্ষদ বেড়ে উঠবে।
রামদেবের এই মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে হামদর্দ কোম্পানি আদালতে মামলা করে।
বাবা রামদেবের ‘শরবত জিহাদ’ আক্রমণের জবাবে হামদর্দ কোম্পানি সুবিচার চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল।
আদালত এদিন বলেছে, এ ধরনের কথা আদালতের বিবেকবুদ্ধিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের কথাকে কোনোমতেই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করা যায় না।
হামদর্দ কোম্পানির পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহতগি বলেন, রামদেবের কথা ‘ঘৃণা ভাষণের’ পর্যায়ে পড়ে।
পাঁচদিনের মধ্যে রামদেবের ওই মন্তব্যের সব বিজ্ঞাপন ও ভিডিও তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তার আইনজীবী। কিন্তু, তাতেও সন্তুষ্ট না হয়ে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, পুরো বিষয়টিতে একটি হলফনামা দিতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে মে মাসে।
সম্প্রতি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এবং মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সদস্য নীতীশ রানেকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘গরম এসে গেছে, এ সময়ে আপনি কী পান করছেন? রুহ আফজা নাকি শরবতে গুলাব?
জবাবে রানে জানান, তিনি প্রচুর গোমূত্র পান করেন।কারণ এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
উল্লেখ্য, শরবত রুহ আফজা এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে উপমহাদেশ জুড়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয়।
রুহ আফজাকে ‘শরবত জিহাদ’ আখ্যায়িত করা এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোর বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কেউ কেউ গোমূত্রের উপকারিতা বর্ণনা করলেও অনেকে একে ‘ধর্মের নামে মূর্খতা’ বলে অভিহিত করছেন।