

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদীকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উত্তেজনা চরমে। নিহত শরীফ ওসমান হাদীর ভাই শরীফ ওমর হাদী অভিযোগ করেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করতেই ক্ষমতাসীন মহলের একটি অংশ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত ‘শহীদী শপথ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওমর হাদী বলেন, “আপনারাই ওসমান হাদীকে হত্যা করেছেন, আর এখন সেই ঘটনাকেই অজুহাত বানিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।” বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার তার বক্তব্য উদ্ধৃত করেছে।
তিনি আরও দাবি করেন, সরকারের ভেতরের একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, যারা দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চায়।
৩২ বছর বয়সী শরীফ ওসমান হাদী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ইউনূস সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি
প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওমর হাদী বলেন, হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে সরকারকেও শেখ হাসিনার মতো পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, “খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করুন, যাতে নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত না হয়। সরকার এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। ওসমান হাদীর জন্য ন্যায়বিচার না হলে, আপনাকেও একদিন বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে হতে পারে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগে যে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ভূমিকা রেখেছিল, শরীফ ওসমান হাদী ছিলেন তার অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর।
সহিংসতা ও প্রাণহানি
হাদীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায় এবং কয়েকটি গণমাধ্যমের অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
জনগণের ক্ষোভের মধ্যে একই রাতে দীপু চন্দ্র দাস নামে এক গার্মেন্টস কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ গাছের সঙ্গে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সহিংসতা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস