
রহমতের দশকের পর এবার শুরু হলো মাগফেরাতের দশক। পবিত্র রমজান মাসের এই দ্বিতীয় অংশে আল্লাহর ক্ষমা লাভের এক অপূর্ব সুযোগ মেলে মুসলিমদের জন্য। এটি এমন এক সময়, যখন বান্দারা তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তাঁর অশেষ রহমত লাভের প্রত্যাশায় মগ্ন থাকেন।
হাদিস শরিফে উল্লেখ রয়েছে, রমজান মাসের প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফেরাতের এবং তৃতীয় দশক নাজাতের (জাহান্নাম থেকে মুক্তির) জন্য নির্ধারিত। এ সময় মুমিনদের উচিত নিজেদের অতীত গুনাহের জন্য তওবা করা এবং ভবিষ্যতে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ জীবনযাপনের সংকল্প গ্রহণ করা।
ইসলামের বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, এই দশকে আল্লাহ বান্দাদের গুনাহ ক্ষমা করে দেন যদি তারা আন্তরিকভাবে তাঁর কাছে তওবা করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার মতো হয়।" (তিরমিজি)
কীভাবে কাটানো উচিত মাগফেরাতের এই দিনগুলো?
১. অন্তর থেকে তওবা করা – অতীতের গুনাহের জন্য অনুশোচনা করা এবং ভবিষ্যতে সেগুলো না করার প্রতিজ্ঞা করা।
২. নামাজ ও কোরআন তিলাওয়াত বৃদ্ধি করা – পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথভাবে আদায় করা, নফল নামাজ পড়া এবং বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা।
৩. দোয়া ও ইস্তেগফার করা – বিশেষত "আস্তাগফিরুল্লাহ" এবং অন্যান্য ক্ষমাপ্রার্থনার দোয়া বেশি বেশি পড়া।
৪. দান-সদকা করা – গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, সাদকাহ ও যাকাত আদায় করা।
৫. রাত জেগে ইবাদত করা – তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং শেষ রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
মাগফেরাতের বিশেষ দোয়া
এই দশকে আমরা নিম্নলিখিত দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে পারি:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মাগফির লি ওয়ারহামনি ওয়া তুব আলাইয়া, ইন্নাকা আন্তাত-তাওয়াবুর রহিম।"
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, এবং আমার তওবা কবুল করুন, নিশ্চয়ই আপনি তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।
রমজানের এই বিশেষ সময় যেন আমাদের জীবনের গুনাহগুলো মাফ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ হয়, এই প্রত্যাশায় আমরা সবাই আল্লাহর ইবাদতে মনোযোগী হই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন এবং তাঁর রহমত দান করুন। আমিন।