১৫৯ জন জুলাইযোদ্ধার বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৫৯ জন জুলাইযোদ্ধার বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে সরকার : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
প্রকাশিত

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে চারটি দেশে ১৫৯ জনের বেশি জুলাই যোদ্ধার চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকার। তিনি এ উদ্যোগকে দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন ও বন্ধুসুলভ দেশগুলোর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত চাহিদার অংশ হিসেবে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া বলে উল্লেখ করেন।

আজ বুধবার বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘নেভিগেটিং দ্য নিউ ল্যান্ডস্কেপ অব গ্লোবাল হেলথ : স্ট্র্যাটেজিক পাথওয়েজস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থার আওতায় আমরা চারটি দেশে ১৫৯ জনের বেশি জুলাই যোদ্ধার চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করেছি। এগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন অথবা বন্ধুসুলভ দেশগুলোর স্বাস্থ্যগত চাহিদার প্রেক্ষিতে কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হয়েছে।’

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। তিনি আলোচনার কর্মসূচি উপস্থাপন করেন এবং পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক স্বাস্থ্য কাঠামোর মধ্যে বাংলাদেশ কীভাবে নিজেকে কার্যকরভাবে অবস্থান নিতে পারে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্য ও কূটনীতির সংযোগস্থলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম এবং দ্বিপক্ষীয় অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।

তিনি জানান, বাংলাদেশ মহামারি চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা, অসংক্রামক রোগবিষয়ক আন্তর্জাতিক ফোরাম এবং স্বাস্থ্য জনবল উন্নয়ন ও হাসপাতাল অবকাঠামো সংক্রান্ত অংশীদারিত্বে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, মহামারি স্বাস্থ্য কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে কাজ করেছে। এ সময় বাংলাদেশ কোভ্যাক্সসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহে সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালায়।

তিনি বলেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ‘স্বাস্থ্যের জন্য পররাষ্ট্রনীতি’ এবং ‘পররাষ্ট্রনীতির জন্য স্বাস্থ্য’ এই দুটি দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প প্রায় ১৫০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণার আন্তর্জাতিক প্রভাব রয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা এবং আফ্রিকায় শান্তিরক্ষী মিশনে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বাংলাদেশের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

তিনি সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের মতো বৃহৎ মানবিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মনোযোগ কমে গেলে তা আঞ্চলিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের রোগতাত্ত্বিক রূপান্তর, জলবায়ুজনিত বাহক রোগ, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এবং আসন্ন এলডিসি উত্তরণ নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এসব মোকাবিলায় নতুন আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব এবং টেকসই অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, সেমিনারের আলোচনার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোর মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করার পথ চিহ্নিত হবে। এর মাধ্যমে ‘ওয়ান হেলথ’ পদ্ধতির আওতায় সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ও জাতীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য শাসনব্যবস্থা ও বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান নিয়ে মতবিনিময় করেন।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com