
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আগামী চার মাসের মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এসব সম্মেলনের আয়োজক জাতিসংঘ, কাতার ও বাংলাদেশ। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল বাড়াতে এবং তাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক প্রয়াস জোরদার করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
আট বছর পর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন বৈশ্বিক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে ‘অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা’ শীর্ষ আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন। আর কাতারের দোহায় ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞ থেকে প্রাণ বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ঢল শুরু হয় বাংলাদেশে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রায় আট বছর পেরিয়ে গেছে। বৈশ্বিক নানা ঘটনা প্রবাহ এবং মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের পর রোহিঙ্গা সংকট আন্তর্জাতিক মনোযোগও হারিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহতভাবে কমেছে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা ঢলের আট বছর পূর্তির দিন ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলনে কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রোহিঙ্গা বিষয়ক কয়েকজন আন্তর্জাতিক দূত, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। কক্সবাজারের শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা এবং বিশ্বের কয়েকটি দেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও এই সম্মেলনে অংশ নেবেন।
এ পর্যন্ত কক্সবাজারের সম্মেলনে অংশ নিতে সৌদি আরব, কাতার, চীন, তুরস্ক, ফিনল্যান্ড, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, গাম্বিয়াসহ অন্তত ১০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
কক্সবাজারে আয়োজিত সম্মেলনটি মূলত তিন দিনের। ২৪, ২৫ ও ২৬ আগস্ট এই তিন দিন আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শরণার্থীশিবির প্রদর্শনী থাকবে ওই আয়োজনে। ২৪ ও ২৫ আগস্ট পাঁচটি কর্ম অধিবেশন থাকছে। আলোচনার বিষয় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং তাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসন শুরু করা। ২৬ আগস্ট রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন অতিথিরা।
রোহিঙ্গা সংকটের সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের মতে, ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু, ২০২৪ সালে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিস্তারসহ নানা ঘটনায় রোহিঙ্গা সমস্যাটি মনোযোগ হারিয়েছে।