
ভোটার নিজের ইচ্ছায় স্বতস্ফুর্তভাবে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন পছন্দের প্রার্থীকে। এমন স্বাভাবিক অবস্থা ভুলতে বসেছিলেন নাগরিকরা। পরপর ৩টি নির্বাচনে বিতর্কের ধারাবাহিকতায় তৈরি হয় আস্থাহীনতা। চব্বিশের ৫ আগস্ট বদলে যাওয়া আবহে এবার আগামী ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতের দেয়াল ভাঙাই ইসির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ভোটারদের আস্থায় আনা, নির্বাচনের পুরো সময়জুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার মোকাবেলা করতে হবে কমিশনকে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্যায় না করলেও সন্দেহ তো থেকে যায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো জনগণের আস্থা অর্জন করা। রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থা অর্জন করতে হবে। তারা ব্যর্থ হলে তো বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
নির্বাচন বিশ্লেষক জেসমিন টুলি বলেছেন, যেহেতু দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা একটি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, তাই তাদের কর্মকাণ্ড কেমন হবে তা আমাদের ভাবনায় আসছে না। চিন্তার মধ্যেও আসছে না, কিন্তু ভোটারের মধ্যে চিন্তা আসছে। আস্থার জায়গা বাড়াতে নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান কার্যক্রম চালাতে হবে, প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে, ভোটারদের বলতে হবে, আপনারা ভোটকেন্দ্রে আসেন।
এরইমধ্যে শক্তিশালী কমিশনের জন্য ভোট বাতিল, নির্বাচিত হওয়ার পরও প্রার্থিতা বাতিলের মতো বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করে আচরণ বিধি প্রস্তাব করেছে ইসি। যা এখন অধ্যাদেশ হিসেবে জারির অপেক্ষায়। এগুলোর পাশাপাশি সদিচ্ছার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
জেসমিন টুলি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকেই দায়িত্ব নিতে হবে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। বহিষ্কার করলাম, এ আমার দলের লোক না— এটুকু বলেই ছাড় দিলে হবে না। দলগুলোকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকার বড় অংশীজন, সরকার মানে প্রশাসন, সরকার মানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তারা যদি সঠিকভাবে ভূমিকা পালন না করে তাহলে কিন্তু স্বাধীন-নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না।
বদিউল আলম মজুমদার ও জেসমিন টুলীর মতে, জনপ্রিয়তার দিক থেকে একটি দল এগিয়ে। এমন অবস্থায় সবাই যেন সমান সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে।