
দেশের সরকারি মৎস্য খামারসমূহ আধুনিকীকরণ ও মাছের উৎপাদন বাড়াতে ৩৭১ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে মৎস্য অধিদফতর। এর মাধ্যমে খামারগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও উন্নত গুণসম্পন্ন মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোলার গ্রামীণ জনউন্নয়ন সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জেলা মৎস্য অধিদফতরের আয়োজনে দিনব্যাপী আঞ্চলিক কর্মশালায় এসব তথ্য জানান প্রকল্প পরিচালক মো. মশিউর রহমান।
তিনি জানান, ষাটের দশকে নির্মিত সরকারি মৎস্য খামারগুলো দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব খামার আধুনিকীকরণের মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বাড়াতেই সরকারের রাজস্বখাত থেকে চার বছর মেয়াদী এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭১ কোটি ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ চলবে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে খামারের উৎপাদন ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি, উন্নত মৎস্য প্রযুক্তি স্থাপন, উন্নত প্রজননক্ষম মাছ সংরক্ষণ এবং খামারে কর্মরত জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধি।
প্রথম পর্যায়ে ৩১টি খামার সংস্কার ও আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়েছে। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে প্রতিটি খামারের একটি পুকুর নিবিড় চাষের জন্য যান্ত্রিকীকরণ, মাছের উৎপাদনশীলতা হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৫ মেট্রিক টন থেকে ৪৭ মেট্রিক টনে উন্নীতকরণ, ২৭টি খামারে প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ অফিস ভবন, ২৮টি লেবার শেড, ৩২টি খামারে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন এবং উন্নত কৌলিতাত্ত্বিক গুণসম্পন্ন মাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থা।
এছাড়া ৫৬টি জেলার ১০৮টি উপজেলার ১১৩টি খামার ধাপে ধাপে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। খামারগুলোতে বটমলাইনার স্থাপন, পুকুর রিমডেলিং, অটোমেশন, পানি সরবরাহ আধুনিকীকরণ, ৮৬টি খামারের বাউন্ডারি নির্মাণ, ৯টি হ্যাচারি ইউনিট, ৯টি ডিপ টিউবওয়েল, ৬টি ওভারহেড ট্যাংক, ৫৭ হাজার ৬৫১ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ ও সংস্কার, ক্রায়োপ্রিজারভেশন ব্যবস্থা এবং যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কাজও করা হবে। পাশাপাশি ৭২টি কর্মশালা-সেমিনার ও ১২৭ ব্যাচ অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে।
ভোলা সদর ও চরফ্যাশন উপজেলার দুইটি মৎস্য খামারও এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।
কর্মশালায় ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেবের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) মো. আহসান হাসিব খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক মো. আনিসুজ্জামান, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপরিচালক এসএম আজহারুল ইসলামসহ মৎস্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।