
রোহিঙ্গাদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে সরকার বৈধভাবে মোবাইল সিম দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রোগ্রেস আইডির বিপরীতে ১৮ বছর বা তার ঊর্ধ্বে থাকা রোহিঙ্গারা এই সিম পাবেন। নতুন সিম বিতরণের পর রোহিঙ্গাদের কাছে থাকা সব অবৈধ সিম বন্ধ করে দেয়া হবে। আগামী ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়ের মধ্যে বিশেষ সিরিজের ১০ হাজার সিম বরাদ্দ দেয়া হতে পারে।
মিয়ানমারের জান্তা শাসনের নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা, যারা কক্সবাজারের ৩৩টি ক্যাম্পে বসবাস করছেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও মোবাইল অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, এসব ক্যাম্পে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মোবাইল ফোনে ৬-৭ লাখ দেশীয় সিম ব্যবহার করা হয়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় এসব সিম দিয়ে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ উঠেছে ক্যাম্পভিত্তিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
নিরাপত্তার কারণে রোহিঙ্গাদের বৈধভাবে সিম ব্যবহারের সুযোগ দিতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এই নিয়ে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে এরমধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। বিটিআরসি ও অপারেটর সূত্র বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা নম্বর সিরিজ রাখা হবে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন নম্বরের ভিত্তিতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের সিম দেয়া হবে।
প্রতিটি সিমের খরচ দেবে ইউএনএইচসিআর বা সরকার। অপারেটররা তিন ধরনের প্যাকেজ অফার করবে। ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন এবং প্রথম ধাপে ওই তারিখের মধ্যেই ১০ হাজার নম্বর বরাদ্দ দেয়া হতে পারে।
সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআরের ডাটাবেজ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত থাকবে। নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। তারা বলছে, ‘এর ফলে রোহিঙ্গাদের গতিবিধি জানা যাবে, স্বচ্ছতা আসবে এবং অনেকেই বৈধভাবে সিম ব্যবহার করতে পারবে।’
তবে নতুন সিম দেয়ার পর বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে নেয়া সচল সিম বন্ধ করে দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে রবি। প্রতিষ্ঠানটির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘বর্তমানের সচল সিমগুলো প্রোগ্রেস আইডির বিপরীতে নতুন করে শুধু নিবন্ধন করা যেতে পারে।’
এর আগে ২০২৩ সালে রোহিঙ্গাদের টেলিটকের সিম দেয়ার কথা ভাবা হয়েছিল, পরে বিষয়টি আর এগোয়নি।