
সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ও গুণী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেখানে সিনেমা ও নাটক সংশ্লিষ্টতা ছাড়াও মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও সরব ছিলেন তিনি। এবার আওয়ামী লীগ সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন এ নির্মাতা।
গত বছরের জুলাইয়ে সংঘটিত গণহত্যা এবং পরবর্তী রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলেছেন নির্মাতা ফারুকী। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ফেসবুক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।
ফারুকী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কল্পনা করেন, ১৯৭২ সালে বসে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা শুধু অপরাধ অস্বীকারই করছে না, বরং মানুষ হত্যাকে সেলিব্রেট করছে এবং বলছে আরও মানুষ মারবে সুযোগ পেলে। কল্পনা করেন, বছরের পর বছর ধরে নানা রকম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নেয়া হিটলার পতনের পরের বছর তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখছে কেউ।’
তিনি লিখেছেন, ‘এটা কল্পনা করতে গেলেই বুঝতে পারবেন, আজকের আওয়ামী লীগের রাজনীতি কোথায় নেমেছে বা আদৌ তাদের রাজনীতি বলে কিছু আছে কিনা। জুলাই গণহত্যার পর খুনি হাসিনা আর তার ডিল্যুশনাল গ্যাঙের কাজ-কর্ম দেখলেই বুঝবেন কেন আওয়ামী লীগ দল হিসেবেই একটা ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশনে পরিণত হয়ে পলিটিক্যালি ইরেলেভেন্ট হয়ে গেছে। আর আইসিটিতে জমা পড়া হাসিনার ফোন কলগুলা শুনলে বুঝবেন কার অনুপ্রেরণায় একটা গোটা দল ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজে পরিণত হলো।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক এ উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘যদিও একাত্তর আর চব্বিশের পার্থক্য আছে। ১৯৭১-এ অনেক বড় হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল, কিন্তু সেটা ছিল ঘোষিত যুদ্ধ এবং অন্য দেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের লড়াই। আর চব্বিশে নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল, গণহত্যা চালিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়া মাত্র এক মাসে নিজ দেশের এতগুলা মানুষ হত্যা করার নজির গোটা বিশ্বেই বিরল। কথাটা খেয়াল করিয়ে দেয়া এই জন্য, যাতে আমাদের আরেকবার মনে পড়ে কী মনস্টার আমরা ফেস করেছি।’
তিনি লিখেছেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি, যাব। ১৬ বছরের দীর্ঘ দুঃশাসনের পর এত বড় অভ্যুত্থান হলে এ রকম পরিস্থিতি অনুমিতই ছিল। সবাই মিলে আমরা ধীরে ধীরে এই তুফান পাড়িও দেব। সবাই মিলেই, নানা দ্বিমত নিয়েও। এবারের জাতিসংঘে সবাই মিলে অংশগ্রহণ সেটারই একটা ইশারা।’
সবশেষ তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা যে অসীম ত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশটা স্বাধীন করেছেন, সেই দেশটা একই আবেগ নিয়ে আগলে রাখবে আজকের আবরার ফাহাদেরা।’