

দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার অবস্থা এতটাই নাজুক যে কেবল নতুন কমিশন গঠন করে কোনো ফল আসবে না, মূল কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া টেকসই পরিবর্তন সম্ভব নয়- এমন মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ইউথ পারসপেকটিভস অন সোশ্যাল প্রগ্রেস: গ্রাসরুটস, নেটওয়ার্কস অ্যান্ড লিডারশিপ ভয়েসেস’ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী সেশনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, 'শিক্ষাব্যবস্থার মৌলিক সমস্যা এত গভীরে যে কেবল কয়েকজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কমিশন গঠন করে কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, অথচ শিক্ষার মান দিন দিন নিচে নামছে। আগে মৌলিক সংস্কার করতে হবে, তবেই শিক্ষাক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব।'
তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশে তিনটি শিক্ষা কমিশন হয়েছে, তাদের প্রস্তাবগুলোও বেশ কার্যকর ছিল। সেগুলো বাস্তবায়ন না করেই নতুন কমিশন গঠন করা কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা ভাবার সময় এসেছে।'
পরিকল্পনা উপদেষ্টা তরুণদের জাতীয় উন্নয়নে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'দেশ গঠনের নেতৃত্ব তরুণদের হাতেই। নিজেদের দক্ষ, সৃজনশীল ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে, তরুণরাই পরিবর্তনের মূল চালিকা শক্তি।'
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুরুষদেরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'শুধু নারীরা নয়, সমাজের পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সামাজিক আন্দোলন ও সংগঠন শক্তিশালী হলে দখলবাজি বা অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব।'
তরুণদের মানসিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, 'জুলাই আন্দোলনের সময়কার সহিংসতা ও প্রিয়জন হারানোর বেদনা অনেক তরুণকে অস্থির করে তুলেছে। তারা দেশের জন্য কিছু করতে চায়, কিন্তু পথ খুঁজে পাচ্ছে না- এ ক্ষেত্রে প্রবীণদের পরামর্শ জরুরি।'
তিনি আরও বলেন, 'দাবি আদায়ের জন্য সড়ক অবরোধের প্রবণতা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। তবে ইতিবাচক দিক হলো- পূর্বের মতো গাড়ি ভাঙচুর বা সহিংসতা আর দেখা যায় না।'
শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, 'বাংলাদেশ এখন ‘জনমিতিক সুযোগের’ সময় পার করছে। আগামী দুই দশকের মধ্যে এই সময়কাল শেষ হয়ে যাবে। তাই তরুণদের নিজেদের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখতে হবে।'