
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি প্রত্যেকটা যৌক্তিক। তাদের ৬ দফার সঙ্গে সরকার একমত। সবগুলো দাবি পূরণ করবে সরকার। যে বাহিনী থেকে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। মাইলস্টোন স্কুলে কন্ট্রোলরুম রুম বসানো হবে। সেখান থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় সবশেষ তথ্য দেয়া হবে। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খারাপ আচরণের জন্য সরকারের পক্ষে ক্ষমা চান আইন উপদেষ্টা।
এর আগে, রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে আজ (মঙ্গলবার, ২২ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুইজন উপদেষ্টা কলেজ পরিদর্শনে আসেন। কলেজ থেকে বের হতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু করে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার কলেজের পাঁচ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে প্রবেশ করলে সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি: নিহতদের সঠিক নাম ও তথ্য প্রকাশ; আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, শিক্ষকদের সঙ্গে সেনা সদস্যদের অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ; ঝুঁকিপূর্ণ প্লেন বাতিল ও আধুনিক প্লেন চালু; মানবিক ও নিরাপদ প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু।
সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করলেও তার আগেই দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে মাইকিং করে প্রতিবাদ বা জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবুও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয় এবং দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়।
এদিকে ঘটনাস্থলে সকাল থেকে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ এসেছেন সন্তান বা স্বজনের খোঁজে, কেউ এসেছেন শোক প্রকাশে। স্কুলের নিরাপত্তা প্রহরী আমির হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই লোকজন আসছে। সবাইকে অনুরোধ করছি যেন তারা শুধু দেখে চলে যান, ভিড় না করেন।’
সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা হোস্টেলে এসে সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছেন। যে ভবনের পেছনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেই হায়দার আলী হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে সরে যেতে দেখা গেছে।
স্কুলশিক্ষক আফরিন জানান, যে ভবনটিতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় সেটি মূলত প্রাথমিক শাখার জন্য ব্যবহৃত হতো। ওই ভবনের কোন শ্রেণিকক্ষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা কতজন শিক্ষার্থী তখন সেখানে ছিল, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি আরও জানান, চারটি হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৮ জন।
মাইলস্টোন কলেজের পরিচালক রাসেল তালুকদার জানান, কলেজের এক নম্বর ভবনের নিচে একটি হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে, যেখানে হতাহতদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও হালনাগাদ করা হচ্ছে। অভিভাবকেরা সেখানে গিয়ে তথ্য দিচ্ছেন এবং নিচ্ছেন।