তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন করায় নারী মৈত্রীর অভিনন্দন

তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন করায় নারী মৈত্রীর অভিনন্দন
প্রকাশিত

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে নারী মৈত্রী। 

উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকে এই অধ্যাদেশ অনুমোদনের প্রেক্ষিতে নারী মৈত্রী মাদার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো, নারী মৈত্রী টিচার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো ও নারী মৈত্রী ইয়ূথ ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো এর পক্ষ থেকে যৌথভাবে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তামাক ব্যবহার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের পক্ষে বলার মতো একটি শব্দও নেই। ধুমপায়ী ব্যক্তি যেমন এই ক্ষতির শিকার, তেমনি তার আশেপাশে যারা থাকেন, পরোক্ষ ধুমপায়ী হিসেবে তারাও এই ক্ষতির শিকার হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টোব্যাকো এটলাস ২০২৫ এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি ৯২ লক্ষেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ (১৫ বছর বা বেশি) তামাক ব্যবহার করে। তার মধ্যে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। প্রতিদিনের হিসাবে যা প্রায় ৩৫৭ জন। অন্যদিকে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে প্রতিবছর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় ৩৯.২ হাজার কোটি টাকা প্রায়। এই অধ্যাদেশ অনুমোদনের মাধ্যমে এই প্রাণহানী ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকে (২৪ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদিত হয়েছে। অনুমোদিত অধ্যাদেশে ইমার্জিং টোব্যাকো প্রডাক্টস—যেমন ই-সিগারেট (e-cigarette) বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ENDS), হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্ট (HTP) ইত্যাদির ব্যবহার, উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে; ‘তামাকজাত দ্রব্য’-এর সংজ্ঞার আওতায় নিকোটিন পাউচ (Nicotine Pouch) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে ধূমপানের পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান (Designated Smoking Area-DSA) রাখার বিধান সরকারের নির্দেশনার শর্তাধীন করা হয়েছে; ‘পাবলিক প্লেস’ ও ‘পাবলিক পরিবহণ’ -এর সংজ্ঞা ও অধিক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হয়েছে; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনসহ ইন্টারনেট বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের সকল প্রকার বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রসার নিষিদ্ধ করা হয়েছে; এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটের গায়ে বিদ্যমান ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৭৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সতর্কবাণী মুদ্রণের বিধান সংযোজন করা হয়েছে।

নারী মৈত্রী ও তার তামাকবিরোধী ফোরামগুলো মনে করে, এই উদ্যোগ জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন। তবে, খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ এবং তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (CSR) নিষিদ্ধকরণ- এই দুটি তামাক নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পন্থা হওয়া সত্ত্বেও অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সরকার এই বিষয়গুলোতেও দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে তারা প্রত্যাশ্যা করছে। 

এই সংশোধিত অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের জন্য অতি দ্রুত গেজেট আকারে জারি করে দেশের নাগরিকদের তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষারও দাবি জানায় এই সংগঠনটি।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com