
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেছেন, প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৬০ জনকে আনা হয়েছে। আসলে বড় সংখ্যক মানুষের জীবনের ঝুঁকি আছে।
সোমবার (২১ জুলাই) জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আসলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, তবে এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। ঘটনা ঘটার পর সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জনকে ভেতরে নেয়া হয়েছে। অনেক মানুষ আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন কলেজ এরিয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। তাৎক্ষণিক হতাহতদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
বিধ্বস্তের ঘটনায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৬০ জনের মতো দগ্ধ হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী বলেও জানান ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
দুপুর আড়াইটার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ছাড়াও উত্তরার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব আহতদের জন্য রক্তের প্রয়োজন।
উদ্ধার কাজে যোগ দেয়া এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট, উত্তরা কুয়েত মৈত্রী মেডিকেল ও উত্তরা মেডিকেলে রোগী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে।
আহত দগ্ধদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিট, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ, মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ নেয়া হয়েছে। এসব আহতদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন।
এদিকে, আহতদের চিকিৎসা সেবার কথা বিবেচনা করে ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিট, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, উত্তরা উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ এবং মনসুরআলী মেডিকেল কলেজ জরুরি বার্তা প্রদান করেছে।
বার্তায় বলা হয়েছে, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন কলেজের ওপরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ফাইটার জেট বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় অনেক রক্তের প্রয়োজন। রক্তদানে আগ্রহীদের দ্রুত উল্লেখিত হাসপাতালগুলোতে যোগাযোগ করতে ও সরাসরি যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সেই সাথে ঘটনা স্থলে ভিড় না করে আহতদের উদ্ধার কাজে সহায়তা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডাক্তার শাওন বিন রহমান বলেন উত্তরায় একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে নারী শিশসহ অন্তত ৬০ জন জরুরি বিভাগে এসেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিনি আরও বলেন, এখনো বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় রোগী আমাদের এখানে আসছে।
মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) বুলবুল আহমেদ বলেন, ঘটনার সময় আমাদের প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। বিকট শব্দে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ে, শিক্ষকরা দ্রুত তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে তৎপর হন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করি। তবে হতাহতের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি জানাতে পারেননি।
মিজানুর রহমান নামে মাইলস্টোন কলেজের একজন কর্মকর্তা সময় সংবাদকে জানান, কলেজ এরিয়ার মাঝে বিমানটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাতে আগুন ধরে যায়।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করেছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিমানটির পাইলট ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। বিমানে তিনি একাই ছিলেন।