ক’দিন আগে যে সব ঝকঝকে তকতকে প্রকল্প দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়েছিলো পতিত স্বৈরাচার সরকার। সেই প্রকল্পগুলোই এখন হয়ে উঠেছে জাতীয় অর্থনীতির সবচেয়ে বড় বোঝা। সরকার পতনের একে মাসের মধ্যেই খসে পড়তে শুরু করেছে গত ১৫ বছরের কসমেটিক উন্নয়নের প্রলেপ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সম্ভ্যাব্যতা যাচাই না করেই শুধুমাত্র লুটপাটের স্বার্থে নেয়া এসব প্রকল্পের নেতিবাচক প্রভাব গোটা জাতিকে বইতে হবে বহুদিন।
পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের অহমিকার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় চট্টগ্রামের কর্ণফূলী নদীর তলদেশে নির্মিত এই টানেলটি। গেল নির্বাচনের আগে তাড়াহুড়া করে উদ্বোধন করা হয় ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পটির।
শুরুতে যে পরিমাণ গাড়ি চলাচলের কথা বলা হয়েছিলো গেল এক বছরে চলেছে তার চার ভাগের এক ভাগ। টানেলটি রক্ষণাবেক্ষণে দৈনিক খরচ হচ্ছে কমবেশি ৩৭ লাখ টাকা করে। আর টোল থেকে আয় হচ্ছে গড়ে ১২ লাখ টাকার কাছাকাছি। আয়ের চেয়ে ব্যয় দ্বিগুনেরও বেশি। ফলে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখিয়ে শুরু করা মিরসরাই ইকোনোমিক জোনে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কোন প্রতিষ্ঠান। পতিত সরকারের চাপে দু/একটি প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করলেও তা এখন বন্ধ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রয়োজনের চেয়ে ইচ্ছাকে বেশি প্রাধন্য দিয়েছে বিগত সরকার। যার ফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ।
ছোট-বড় এমন অসংখ্য প্রকল্প আছে যা শুধু লোক দেখানো আর লুটপাটের জন্যই নিয়েছিলো আওয়ামীলীগ সরকার। অর্থনীতিবিদরা বলছেন শুধু পতিত সরকারের শীর্ষ কর্তারাই নয়। এসব অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতদেরকেও আনতে হবে বিচারের আওতায়।
৭/৮ বার ডিজাইন পরিবর্তন করে তৈরী করা হয়েছে লালখানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। অথচ চট্টগ্রামের মাস্টারপ্লানে এমন উড়ালসড়কের কোন প্রয়োজনীয়তাই নেই। ফ্লাইওভারটি পরীক্ষামুলক চালু হলেও তাতে ওঠে হাতে গোনা কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি।