
জাতীয় প্রেসক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের ১ বছর, শ্রমিক আকাঙ্ক্ষা ও প্রাপ্তি শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরী। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপ্রধান ও শ্রম সংস্কার কমিশন ২০২৪-এর সদস্য তাসলিমা আখতার। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দীনা সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আশরাফ, নাট্যকর্মী ঋতু সাত্তার, চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান, নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব, শ্রম বিকাশ কেন্দ্রের পরিচালক সীমা দাস সিমু এবং হকার সমিতির সভাপতি বাচ্চু ভূঁইয়া।
শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলম, এনসিপির শ্রমিক উইং এর প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম ফকির, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু গোষ, সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার, শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক তফাজ্জল হোসেন, গ্রীন বাংলা গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি সুলতানা, শ্রমিক নেতা রাজু আহমেদ ও শামীম ইমাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আজ কমিটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের ১ বছরে শ্রমিক আকাঙ্কা ও প্রাপ্তি নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তারা গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির ১১ দফার সাথে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, সরকার জুলাই ঘোষনা বা সনদে শ্রমিকদের আকাঙ।খা পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। এমনকি ঐক্যমত কমিশনের শ্রম ও নারী বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ কমিশনের সুপারিশ আমলে নেয়া হয়নি। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শ্রমিকের আকাঙ্খা জান-জীবিকা ও জবানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তারা আরো বলেন, এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শ্রম খাতকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে পৌছানোর অঙ্গীকার করছে। কিন্তু এখনো শ্রম আইনের যথাযথ সংশোধন সম্পন্ন হয়নি এবং কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। তারা বলেন সরকারের বিচার-সংস্কার এবং নির্বাচন এই রোড ম্যাপের সাথে শ্রমিকের দাবি বাস্তবায়নের কোন বিরোধ নেই। তাই নির্বাচনী ডামাডোলে প্রবেশ করার আগে সরকারকে উদ্যোগী হয়ে দৃশ্যমান ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রম কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায় শুরু করতে হবে এবং অবশ্যই শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।
শ্রম কমিশন ২০২৪ এর প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দীন আহমেদ বলেন, দেশের সকল শ্রমিক সংগঠন ও অংশীজনদের সাথে নিয়ে শ্রম সংস্কার কমিশন সুপারিশ করতে পেরেছে, এটি একটি অর্জন। কিন্তু এটি বাস্তবায়নে সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন কশিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সকল শ্রমিক সংগঠ এবং শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আলোচকরা আরো বলেন, পোশাকখাতসহ শ্রম খাতকে উন্নয়ন করতে হলে শ্রমিকের জীবনমান বদলাতে শ্রমিকপক্ষে আইন, মজুরি, মতপ্রকাশ ও সংগঠন করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। কেবল কারখানার বা মালিকের উন্নয়নে শ্রমখাত উন্নয়ন হবে না। শ্রমিকের ইতিহাস সংরক্ষনে তারা মিডিয়ার ভূমিকাকে গুরুত্ব দেন।একইসাথে তারা বলেন, দেশীয় পরিস্থিতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে শ্রমিক আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত ও দাবি উত্থাপন জরুরি। ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনই পারে ভুমিকা রাখতে। বক্তারা সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শ্রম কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য এবং ১১ দফা বাস্তবায়নে ভুমিকা রাখতে আহবান জানান।