

আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দ্বারা অপমানিত বোধ করছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
ড. ইউনূস তাকে উপেক্ষা করেছেন উল্লেখ করে রয়টার্সকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি সত্যিই যেতে চাই।’
ঢাকা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমি পদে থাকব। আমি সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপতির পদ বজায় রেখেছি।’
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন ৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। এর বাইরে পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। দেশের কার্যনির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে চলে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের অবস্থান গুরুত্ব পায়। সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর তিনিই ছিলেন দেশের শেষ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।
শেখ হাসিনার পালানোর পর তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কিনা রয়টার্সের এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর দেননি তিনি। মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি স্বাধীন, কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন।’
রাষ্ট্রপতি জানান, প্রধান উপদেষ্টা প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেন না। প্রেস বিভাগ কেড়ে নেওয়া এবং সেপ্টেম্বর মাসে তার ছবি বিশ্বের বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দূতাবাস, হাইকমিশন এবং কনসুলেটে রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল, যা এক রাতের মধ্যে হঠাৎ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটি জনগণের কাছে একটি ভুল বার্তা যায় যে, হয়তো রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমি খুবই অপমানিত বোধ করেছি।’
রাষ্ট্রপতি রয়টার্সকে আরও জানান, তিনি প্রতিকৃতি সরানো নিয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি লিখেছিলেন; কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ‘আমার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে,’ রাষ্ট্রপতি যোগ করেন। তবে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।