

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম সম্পাদকরা, সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন যে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হুমকি এখন বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র (হাদী), মৃত্যুবরণ করার পর দুটি পত্রিকা অফিসে সহিংস হামলা শুরু হয়।
জুলাই বিপ্লবের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, শরীফ ওসমান হাদী (৩২), দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাতে ভূমিকা রেখেছেন। ঢাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি মুখোশধারী আততায়ী দ্বারা মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তার মৃত্যুর পর ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রধান দুটি গণমাধ্যমসহ, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে লক্ষ্য করে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
"ভারত এবং শেখ হাসিনার স্বার্থ রক্ষার" হাতিয়ার বলে দ্য ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোর অফিস আক্রমণ করা হয়।
সম্পাদকরা এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন। সম্পাদক পরিষদ এবং বাংলাদেশের সংবাদপত্র মালিক সমিতি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায়, দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, সাংবাদিকরা স্পষ্টতই মৃত্যুর হুমকিতে আছেন। "সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা বার্তা দেখেছি যে দ্য ডেইলি স্টার এবং প্রথম আলোর সাংবাদিকদের, বাড়ি খুঁজে বের করে হত্যা করা উচিত"। এখন আর মূল বিষয় "মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়,বরং বেঁচে থাকার অধিকার।"
বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা সূচকে, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯তম। সাংবাদিক এবং কর্মীদের উপর অব্যাহত আক্রমণ, নির্বাচনের আগে নাগরিকদের অবস্থান আরও সংকুচিত করতে পারে, উল্লেখ করে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো।
সহকর্মীদের উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়া, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি এবং নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের অফিসের ভেতরে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে ।
নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশ শাসন করছে এবং ১২ ফেব্রুয়ারি নতুন সংসদ নির্বাচনের কথা রয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব সহিংসতার জন্য মূলধারা বহির্ভূত বিষয়গুলোকে দায়ী করে পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেন।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস জানিয়েছে, পুলিশ হামলার সাথে জড়িত ৩১ সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করেছে এবং ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সূত্র- ‘রয়টার্স’