
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে জামায়াতে ইসলামী ইতিবাচক এবং বাস্তবসম্মত সংস্কারে পূর্ণ সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার সংলাপের শুরুতে দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, “দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর যে কোনো সংস্কারে জামায়াত পরিপূর্ণভাবে ঐকমত্য পোষণ করে।” তাহের আরো জানান, মানুষের মধ্যে বর্তমানে ব্যাপক হতাশা বিরাজ করছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতার বা নতুন বাংলাদেশের সূচনা দেখেছে। তবে তিনি সতর্ক করেন, এই অর্জন যেন অতীতের মতো হাতছাড়া না হয়। এজন্য আরও বেশি সচেতন এবং প্রয়োজনে কঠোর ভূমিকা গ্রহণের ওপর জোর দেন তিনি। মৌলিক বিষয়গুলোর সংস্কারের জন্য সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে দলের অবস্থান তুলে ধরে সৈয়দ তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ। কোনো রাষ্ট্রের হুমকি কিংবা চাপকে ভয় না করে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলেও তিনি দৃঢ় ঘোষণা দেন।
গণতন্ত্রের চর্চার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তাহের জানান, জামায়াতে ইসলামীর অভ্যন্তরীণ নির্বাচন নিয়মিত হয় এবং সেখানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। প্রচার ও প্যানেল ছাড়াই এ নির্বাচন পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, দেশে এমন নির্বাচন চাই, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হবে। বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছিল, তার পরিণতি এখন গোটা জাতিকে ভোগ করতে হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সৈয়দ তাহের বলেন, দেশের বর্তমান সংকটের মূল কারণ দুর্নীতি। জনগণের ভোট ছাড়া যারা ক্ষমতায় আসে, তাদের নির্বাচনকেও তিনি দুর্নীতির একটি বড় রূপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, হামিদুর রহমান আজাদ, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মুনির।