
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার যে সুযোগ এসেছে, তা কাজে লাগাতে রাজনৈতিক ঐক্যের বিকল্প নেই। শুরুর দিকে এমন কথা উচ্চারিত হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। তাই, দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে কয়েকদফা, ধারাবাহিক সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছে ঐকমত্য কমিশনও। কিন্তু, মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন।
এক বছরের ব্যবধানে নির্বাচনি হিসাব-নিকাশ মেলাতে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে বড় দলগুলো। একে-অপরের প্রতি ছুড়ছে আক্রমণাত্মক ভাষা। বড় দলগুলোর রাজনীতিতে এমন অসহিষ্ণুতাকে অশনি সংকেত বলছে অন্যান্য দলগুলো।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপি সরাসরি রাজপথে বলছে এনসিপি-জামায়াত রাজাকার সবমিলে একাকার। ডাইরেক্ট এক পক্ষ আরেক পক্ষকে আক্রমণ করা শুরু করেছে। এটা যদি সমাধানে না যায় তাহলে এটা খারাপ পরিণতির দিকে যাবে।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, যদি কেউ ক্ষমতার লোভে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তাহলে সংঘাত বাড়তে পারে, তা আমরা চাই না। কারণ এদেশে যদি কেউ খুন হয় সে তো আমাদের ভাই, আমাদের ছেলে। দেশের তো কোনো ফায়দা হলো না। এ জন্য শান্তিপূর্ণভাবে দেশটাকে গড়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ি।
দলগুলো নিজেরদের মধ্যে সংঘাতে জড়ালে কেবল বিচার-সংস্কারই বাধাগ্রস্ত হবে না, অনিশ্চিত হয়ে পড়বে নির্বাচন। এই শঙ্কা থেকে শান্তির পথ খোজার আহবান তাদের।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, যেহেতু আমরা একটা ব্যবস্থা নির্মাণের প্রক্রিয়ায় আছি, এই মূহুর্তে আমাদের নূন্যতম ঐকমত্য রক্ষা করা দরকার। যাতে করে আমরা এ উত্তরণটা মসৃণভাবে করতে পারি। আমরা যদি ঐকমত্যের বদলে দণ্ডকে প্রধান করে নেই তাহলে পতিত ফ্যাসিস্টরা এবং দেশি বিদেশি নানা পৃষ্ঠপোষকরা সুযোগ নিবে।
মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, এই মূহুর্তে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে দেশের প্রতি আপনি সুবিচার করছেন না। দেশকে ভালোবাসেন সেটা বলতে পারছেন না, বরং দেশের ক্ষতি হবে। সেই বিবেচনায় এটা পরিহার করে তাদেরকে বলবো যেটা রাজনৈতিক সেটা রাজনৈতিকভাবে নিষ্পত্তি করেন। গায়ের জোড়ে কোনো কিছু করার চেষ্টা বাদ দেন।
তারা মনে করেন, এবার রাজনীতিবিদরা ব্যর্থ হলে গেঁড়ে বসতে পারে তৃতীয় কোনো পক্ষ, যা বহুদিনের জন্য পিছিয়ে দিবে একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক দেশের স্বপ্ন।