
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আগামী ৩ মে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। রবিবার রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আমির, শায়খুল হাদীস আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট, ধর্মীয় মূল্যবোধের অবক্ষয়, শিক্ষা নীতিমালা, এবং ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষায় সংগঠনের করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা উল্লেখ করেন, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, ইসলাম বিদ্বেষী কর্মকাণ্ড ও কটূক্তি রোধে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, দেশের নৈতিক ও ধর্মীয় অবক্ষয় রোধে আলেম-উলামার ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। তাই ইসলামি চেতনায় দেশ পরিচালনার লক্ষ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে এই মহাসমাবেশ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা আরও জানান, এই সমাবেশে দেশব্যাপী লাখো অনুসারী ও তৌহিদী জনতা অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হেফাজতের পক্ষ থেকে এ মহাসমাবেশকে শান্তিপূর্ণ ও ধর্মীয় চেতনায় উদ্ভাসিত একটি সমবেত আয়োজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি কমিটি গঠন এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে হেফাজতের এই সমাবেশ কেবল একটি ধর্মীয় কর্মসূচি নয়—এর মাধ্যমে তারা তাদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন করে সক্রিয় হবার বার্তা দিতে চায়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ ধরনের সমাবেশকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বাড়তি সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হেফাজতের ঘোষিত কর্মসূচি এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আগামি দিনগুলোতে এই মহাসমাবেশের প্রতিক্রিয়া এবং তা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সার্বিক রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা নজরকাড়া বিষয় হয়ে উঠতে পারে।