
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে আমরা জাতীয় পার্টির আস্ফালন দেখতে পাচ্ছি। অনতিবিলম্বে জাতীয় পার্টির কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্তমঞ্চে জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই সনদের কার্যকর করার যথাযথ পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সর্বদলীয় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির কারণে জাতীয় ঐক্য নষ্ট হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের এক বছরে কোনো চাঁদাবাজদের বিচার না হওয়াই চাঁদাবাজি আরও বেড়েছে।’
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ডক্টর ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে ভিপি নুর বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য আগামী ৬ মাস আপনাদের হাতে আছে। এ সময়ের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করুন। প্রশাসনকে ঢেলে সাজান। অন্যথায় আপনারা নির্বাচন করে বিদায় নিতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সংকট দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনকালীন আরেকটি সরকার গঠনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ বেশ কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজন প্রীতি এবং সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাই এই অবস্থা চলতে থাকলে নির্বাচনের আগে আরেকটি নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি জোরালো হবে। আমাদের অবস্থান সেদিকে থাকবে।’
একই সমাবেশ গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের দোসরা ডামি মামি স্বতন্ত্র কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ড. ইউনূস আওয়ামী লীগের যে ফ্যাসিবাদ সিস্টেম, সেই সিস্টেমে দেশ চালাচ্ছেন। আমরা এটা প্রত্যাশা করিনি।’
গত ২০১৮ সাল থেকে গণঅধিকার পরিষদ জনগণের অধিকারের পক্ষে লড়াই করে আসছে জানিয়ে রাশেদ বলেন, ‘শেখ মুজিব ৭১ এর পূর্ব পর্যন্ত নায়ক ছিলেন। কিন্তু ৭১ পরবর্তীতে বাকশাল কায়েম করে গুম খুনের ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন। শেখ মুজিব তার অধ্যায় নিজেই শেষ করেছে। শেখ হাসিনাও তার বাবার মতো গুম-খুনের ত্রাস সৃষ্টি করে ভারত পালিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস যথাযথ সংস্কার না করে আওয়ামী লীগের আমলাদের নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন। গণঅধিকার পরিষদ এমন একটা নির্বাচন চান যেখানে ভোটে কোনো কারচুপি হবে না।’
সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি আশরাফুল হাসান তপুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ছানা নুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওবায়দুল্লাহ। এছাড়া জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।