নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগ, ক্ষোভ প্রকাশ তাসনিম জারার

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের অভিযোগ, ক্ষোভ প্রকাশ তাসনিম জারার
প্রকাশিত

গত ৫ আগস্ট থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ ৫ নেতার কক্সবাজারে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে সাক্ষাতের গুঞ্জন ওঠে। সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. ইতোমধ্যে তাসনিম জারা নেপাল ভ্রমণ করেছেন। সেটিও নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বলা হচ্ছে তিনি সেখানে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন। এমন অভিযোগে তাসনিম জারা নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পোস্টে তিনি লিখেছেন- আমাকে ঘিরে ধারাবাহিকভাবে অনেক মিথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। আমি এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না, শুধু কাজে মনোযোগ দিতে চাই। তবে সত্যটা তুলে না ধরলে মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। তাই কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করা প্রয়োজন মনে করছি।

১। আমি নেপালে গিয়েছিলাম নেপাল সরকারের আমন্ত্রণে নিরাপদ বাতাস (clean air) নিয়ে কথা বলতে। আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর দূষিত বাতাস কীভাবে প্রভাব ফেলছে, সেটা ছিলো আমার বক্তব্যের বিষয়। এ প্রোগ্রামে যাওয়ার জন্য নেপালের এমবাসি আমার সাথে যোগাযোগ করেন প্রায় দুই মাস আগে (২ জুলাই)। ছবি কমেন্টে দিচ্ছি। নেপালে আমার সঙ্গে আমেরিকার কোনো অফিসিয়ালের কোনো ধরনের যোগাযোগ হয়নি, মিটিং তো দূরের কথা। অথচ ভারতের একটি পোর্টাল থেকে গুজব ছড়ানো হয় যে আমি নেপালে গিয়ে এক আমেরিকান অফিসিয়ালের সাথে ব্রেকফাস্ট মিটিং করেছি এবং দাবি করা হয় যে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা তাদেরকে এই তথ্য দিয়েছে। এই সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কাল্পনিক।

২। এই মাসেই আমাকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানো হয়েছিল যে আমি আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করছি কক্সবাজারে। পরবর্তীতে যে মিডিয়া এটি প্রচার করেছিল তারাই স্বীকার করে নেয় যে এটি মিথ্যা ছিল এবং তারা দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যে ভরসা করেই তারা এই মিথ্যা সংবাদটি ছড়িয়েছিল।

৩। ১১ আগস্ট আমাদের পার্টির একটি বৈঠক হয় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। সেই বৈঠকে আমাদের পার্টির আহবায়ক, সদস্য সচিব, আমি ও একজন যুগ্ম সদস্য সচিব যোগদান করেন। এটি কোনো গোপন বৈঠক ছিল না। আমরাই প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ করি। জুলাই ও আগস্টে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গেও একই ধরনের বৈঠক করেছেন। অর্থাৎ এটি ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত কূটনৈতিক কার্যক্রমের অংশ।

কিন্তু আমাদের বৈঠকের সময় একটি সংবাদমাধ্যম গোয়েন্দাদের দেওয়া একটি ছবি প্রকাশ করে, যেটি আমার পেছন থেকে তোলা, দেখে মনে হবে আমি নাকি গোপন কিছু করতে যাচ্ছি। অথচ বিএনপি বা জামায়াতের বৈঠকের ক্ষেত্রে তারা এমন কিছু করেনি। প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কি দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নাকি মিডিয়ার ফটোগ্রাফারের ভূমিকা পালন করা ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে কুৎসা রটানো?

৪। এই আগস্ট মাসে অন্তত তিনবার একই ধরনের মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। তিনটা ক্ষেত্রেই গোয়েন্দা সংস্থা উৎস হিসাবে এসেছে। আর এসব নিউজ ছড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখছেন আওয়ামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মিডিয়া। তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট: একই মিথ্যা বারবার বলে তা সত্যে পরিণত করার চেষ্টা। রাজনীতিতে পারসেপশন বাস্তবতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মিথ্যা দিয়ে আমাকে ‘বিদেশি শক্তির এজেন্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা চলছে। এটি নতুন কিছু নয়। রাজনীতিতে বিশ্বাসযোগ্য কোনো কণ্ঠস্বর উঠে এলে তাকে বিদেশি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িয়ে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়।

এসব মিথ্যায় আমাকে দমানো যাবে না। আমি আমার কাজে তথা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সচেষ্ট থাকবো। আশা করছি, আপনারাও আমার সাথে থাকবেন। শেষ পর্যন্ত সত্য টিকে থাকবে, মিথ্যা ধ্বংস হবে। এটা সুনিশ্চিত।

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com