পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করবো: ফয়জুল করীম

পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করবো: ফয়জুল করীম
প্রকাশিত

পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খুলনা নিউমার্কেট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন তিনি।

শায়েখে চরমোনাই বলেছেন, পিআর সিস্টেমেই নির্বাচন হবে, ইনশাআল্লাহ। এই পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠন হবে। যেখানে চাঁদাবাজি থাকবে না, কালো টাকার ব্যবহার হবে না। পেশি শক্তির ব্যবহার করতে পারবে না। যেখানে সেন্টার দখল হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচনই বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ নির্বাচন। 

ফয়জুল করীম বলেন, পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের জন্য আমরা আন্দোলন করবো, সংগ্রাম করবো। সরকারকে বলবো পিআর সিস্টেমে নির্বাচন দেন, যদি না দেন তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের কাছে গণভোট দেওয়ার জন্য বাক্স দেন। যদি জনগন পিআর সিস্টেম চাই, তাহলে আমরাও করবো। আর জনগণ না চাইলে আমরাও করবো না। বিএনপির কোন ভোট নেই। এই ভোট একসময় ছিল মুসলিম লীগের, সেখান থেকে আওয়ামী লীগ, তারপর আসছে বিএনপির, এরপর জাতীয় পার্টির, এবার জোটের ভোট। ভোট পরিবর্তনশীল। কারও জন্ম দেওয়া ভোট নেই। ভোটাররা সবসময় দেখবে কার কাছে তার জানমালের নিরাপত্তা আছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের বহুত ভোট আছে। ভোটাররা তো পালায়নি, তাদের ভোট কে পাবে? এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছি সহজ কথা- যাদের কাছে তার জান এবং মালের নিরাপত্তা থাকবে তাকে ভোট দিবে। আমি ভোট কাকে দিব? যার কাছে আমার জান, মাল, ইজ্জত, আব্রু, আমার স্ত্রী-সন্তান নিরাপদ থাকবে, জায়গা, জমি নিরাপদ থাকবে তাকেই ভোট দিব। অন্য কাউকে ভোট দিতে পারে না। তোমরা যে অংক করছো আগের হিসাব শেষ হয়ে গেছে। এখন ডিজিটাল যুগ, এনালগ সিস্টেম বাদ। যুগই পরিবর্তন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ১৭ বছর যে জুলুম অত্যাচার করেছে, সেখান থেকে কিছু মানুষ এমনভাবে তৈরি হয়েছে, তারা জুলুম অত্যাচারকে তোয়াক্কা না করে দুনিয়া থেকে মিটাবার জন্য তৈরি হয়েছে। কোন জুলুম-অত্যাচারকে তারা ভয় পায় না। প্রতিবাদ তারা শিখেছে।

ফয়জুল করীম বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চাঁদাবাজ, গুণ্ডা, বদমাশ, ধর্ষকদেরকে ভোট দেবে না, দিতে পারে না। কোন জ্ঞানী নিজেকে নিজে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে পারে না। ভোট না দিলে সেন্টার থেকে ফিরতে দেবে না, এমন বক্তব্য আছে। কিন্তু সেই জামানা শেষ হয়ে গিয়েছে। ভোটের আশার গুড়ে বালি চলে গেছে। এবার ভোট দিবে শান্তি প্রিয় মানুষদেরকে। খুলনায় এক সময় গুণ্ডা ছিল, তাদের হুমকি-ধামকি ছিল। এখন গুণ্ডাতন্দ্র আছে? এই গুণ্ডাতন্দ্র, অস্ত্রতন্ত্র আস্তে আস্তে বিদায় হয়ে যাবে। এখন আর মানুষ অস্ত্রতন্ত্রকে ভয় পায় না। এবার কাকে ভোট দিবে যাদের কাছে মানুষ শান্তি পাবে, মুক্তি পাবে। জান-মালের নিরাপত্তা পাবে, দেশের টাকা চুরি-লুটপাট হবে না। অন্যায়-অবিচার হবে না। যুবকরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। মাদকে সয়লাব হবে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে না। শতভাগ কাজ হবে। যেখানে মা-বোনদের ইজ্জত-আব্রু রক্ষা হবে। আমি বিশ্বাস করি তাদেরকেই মানুষ ভোট দিবে।

সব জায়গায় ধোঁকাবাজি মন্তব্য করে শায়েখে চরমোনাই আরও বলেন, যারা নৌকায় নির্বাচন করে, তারা নৌকা চালাতে পারে না। যারা লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করে নিজেরা লাঙ্গল বইতে পারে না। যারা ধানের শীষে নির্বাচন করে নিজেরা ধান কাটতে পারে না। সমস্ত মার্কাগুলো গরীবদের। অথচ যারা নির্বাচন করে তারা একজনও গরীব না। কিন্তু হাতপাখা এমন এক মার্কা যে নির্বাচন করে সেই ঘোরাতে পারে। যারা সমর্থন করে তারাও চালাতে পারে। হাতপাখা সকলের প্রয়োজন। কারেন্ট ফেল করে হাতপাখা ফেল করে না। আমি বিশ্বাস করি হাতপাখার বিজয় হলে জনগনের বিজয় হবে। হাতপাখার বিজয় হলে দেশ বিজয় হবে। প্রত্যেকটা মানুষ শান্তি পাবে। হাতপাখা শান্তির প্রতীক। সব মার্কা দেখা শেষ, হাতপাখার বাংলাদেশ।  

দলের খুলনা মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারী মুফতী ইমরান হুসাইনের পরিচালনায় এই সমাবেশ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মুজিবুর রহমান শামীম, আবু তাহের, হাফেজ আব্দুল লতিফ, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন  হেলাল, মাওঃ শরীফ সাইদুর রহমান, হাফেজ শহিদুল ইসলাম, শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, মাওঃ আবু সাঈদ, আবু গালিব, শোয়াইব আহমেদ, মুফতি আরিফ বিল্লাহ, মাওঃ দ্বীন ইসলাম, মো. ইমরান হোসেন মিয়া, মাওঃ ইলিয়াস হোসেন, মাওঃ সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মো. তরিকুল ইসলাম কাবির।  

আরো পড়ুন

No stories found.
logo
The Metro TV | দ্য মেট্রো টিভি | The Metro TV Bangladesh | Bangla News Today | themetrotv.com |The Metro TV News
themetrotv.com