
দীর্ঘ ১৮ বছরের খরা কাটাতে পারল না আর্জেন্টিনা। আরও লম্বা হলো তাদের অপেক্ষা। আলবিসেলেস্তেদের হতাশায় ডুবিয়ে ইতিহাস গড়ল মরক্কো। প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল আফ্রিকান দেশটি।
চিলির সান্তিয়াগোতে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে হওয়া শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারায় মরক্কো। দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে একাই দুই গোল করেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড ইয়াসির জাবিরি।
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই মরক্কোর প্রথম শিরোপা। এত দিন ২০০৫ সালের আসরে রানার্স-আপ হওয়া ছিল তাদের সেরা সাফল্য। প্রায় ২০ বছর পর এবার নতুন ইতিহাস লিখল তারা।
অন্য দিকে ১৯৮৩ সালের পর আবার রানার্স-আপ হলো আর্জেন্টিনা। এর আগে-পরে ছয়বার ট্রফি ঘরে তুলেছে আলবিসেলেস্তেরা। তবে ২০০৭ সালের পর আর এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা।
ফাইনালের দুইটিসহ টুর্নামেন্টে মোট ৫ গোল করে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা ইয়াসির। তবে গোল্ডেন বুট অবশ্য জিততে পারেননি তিনি। তবে আসর জুড়ে ভালো খেলায় সিলভার বল জেতেন মরক্কোর ফরোয়ার্ড।
টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফুটবলের প্রদর্শনীতে আসরের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার গোল্ডেন বল জেতেন মরক্কোর ওথমান মামা।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের আগপর্যন্ত নক আউট পর্বে কোনো গোল হজম না করা আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি জেতেন গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কার।
শিরোপার মঞ্চে ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখিয়েই খেলে আর্জেন্টিনা। কিন্তু গোলের তালা ভাঙতে না পারায় হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
ম্যাচে প্রায় ৭০ শতাংশ সময় বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। গোলের জন্য মোট ২০টি শট করেন লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াদের উত্তরসূরিরা। কিন্তু জাল খুঁজে পায়নি। বিপরীতে ৪টি শট লক্ষ্যে রেখেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়ে যায় মরক্কো।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে আচমকা আক্রমণে আর্জেন্টিনাকে চমকে দেয় মরক্কো। ডি-বক্সের মুখে গোলরক্ষককে একা পেয়ে শট করেন ইয়াসির। তখনই দুজনের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। তবে ফাউল দেননি রেফারি।
তাই খেলার শুরুতেই 'গ্রিন কার্ড' ব্যবহার করে ভিএআর রিভিউয়ের আবেদন করে মরক্কো। এতে দেখা যায়, ডি-বক্সের ঠিক বাইরে হয়েছে ফাউল। তাই পেনাল্টি পায়নি মরক্কো। তবে হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
ওই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি-কিকে বল জালে জড়ান ইয়াসির। তার উঁচু করে নেওয়া বাম পায়ের বাঁকানো শট তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সান্তিনো বার্বি।
পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ২৮তম মিনিটে উল্টো দ্বিতীয় গোল হজম করে বসে তারা। পাল্টা আক্রমণে ওথমান মামার ক্রস পেয়ে বাম পায়ের ছোঁয়ায় দ্বিতীয় গোল করেন ইয়াসির।
এরপর ব্যবধান কমাতে একের পর এক চেষ্টা করতে থাকে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। বারবার মরক্কোর রক্ষণে হানা দিলেও সে অর্থে জোরাল কোনো আক্রমণ করতে পারেনি তারা। এমনকি লক্ষ্য বরাবরও ছিল না বেশিরভাগ শট।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হওয়ার পর দেওয়া হয় অতিরিক্ত আরও ৫ মিনিট। সেই সময় শেষ হওয়ার বাঁশি বাজাতেই উল্লাসে মাতেন মরক্কোর ফুটবলাররা আর গ্যালারিতে শুরু হয় লাল জার্সির উচ্ছ্বাস।
একই দিন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে দ্বিতীয় মিনিটে করা ওস্কার পেরেয়ার গোলে ফ্রান্সকে হারায় কলম্বিয়া।